আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সময়সীমা নিয়ে জি-সেভেন নেতারা আলোচনা করবেন

বুধবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারে প্রতিবাদ চলাকালীন আফগানিস্তানের পতাকা হাতে হেঁটে যাচ্ছেন একজন বিক্ষোভকারী। ১৮ আগস্ট ২০২১।

জি-সেভেন রাষ্ট্রগুলির নেতারা আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার এক বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছেন। অনেক সদস্য রাষ্ট্রই আফগানিস্তান থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার চলমান প্রচেষ্টার সুবিধার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের বর্তমান সময়সীমা ৩১ শে আগস্টের পরও সেখানে সৈন্য মোতায়েন রাখতে বলছে।

এই ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, “আমি আমাদের বন্ধু ও মিত্রদের আফগানিস্তানের জনগণের পাশে থাকতে বলবো এবং শরনার্থীদের সহায়তা এবং মানবিক ত্রাণ বাড়িয়ে তুলতে বলবো”।

বাইডেন নির্দিষ্ট সময়সীমা আর এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবার কথা। হাজার হাজার পশ্চিমি দেশের নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় যারা সমর্থন দিয়েছিলেন এবং আফগান নাগরিকরাও, নিরাপদে ফ্লাইট ধরে দেশ ত্যাগ করার জন্য হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

তবে আফগানিস্তানের অনেক নাগরিকই বলেছেন যে বিমান বন্দর এলাকার চারপাশে তালিবানের তল্লাশি চৌকি পেরিয়ে বিমান বন্দরে পৌঁছানো অসম্ভব না হলেও কঠিন ব্যাপার। তালিবান কর্মকর্তারাও যুক্তরাষ্ট্রকে কোন রকম ছাড় দিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে, তারা আসন্ন সময়সীমাকে, “ লাল রেখা” বলে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান সোমবার হোয়াইট হাউজে সংবাদদাতাদের বলেন, “কাবুলে এই মূহুর্তে ঠিক কি হচ্ছে তার সব দিক নিয়েই আমরা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যানেল দিয়ে প্রতিদিনই তালিবানের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি”। হোয়াইট হাউজ এই প্রত্যাহারকে যে ভাবে পরিচালনা করছে তাকে সমর্থন করে সালিভান আরও বলেন বাইডেন এটিকে, “ দৈনিক হিসেবেই দেখছেন এবং আমরা এগিয়ে গেলে তিনি সব ঠিক করবেন।

সালিভান বলেন, “সে দেশ থেকে লোকজন নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সংখ্যার দিক দিয়ে আমরা অনেক এগিয়ে রয়েছি”।

১৫ই আগস্ট তালিবান বাহিনী আফগান রাজধানীতে প্রবেশের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিধায়করা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা, এমন কী যুক্তরাষ্ট্রের কিছু মিত্ররাও এ নিয়ে সমালোচনা করছেন। তবে এই উদ্ধার কাজ ধীর গতিতে শুরু হলেও, আফগানিস্তান থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার প্রচেষ্টা এখন দ্রুত গতিতেই চলছে।

সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন গত ৩৬ ঘন্টায় ২৭,০০০ লোককে বিমানে করে আফগানিস্তানের বাইরে নিয়ে আসা হয় যার মধ্যে ১৭,০০০ কে আনা হয় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ফ্লাইটে।

দিনে আরও আগের দিকে পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কার্বি বলেন, লোকজনকে সরিয়ে আনার সংখ্যা বাড়া সত্ত্বেও আমরা কোন কিছুকেই নিশ্চিত ভাবে নিচ্ছি না। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কর্মকর্তাও সতর্ক করে দিয়েছেন যে লোকজনকে আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সরিয়ে আনা সত্ত্বেও, হয়ত আরও সময় লাগতে পারনে।

তবে তালিবান যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আরও সময় দেবে কীনা সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। ব্রিটেনের স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তালিবান মুখপাত্র সুহেইল শাহীন, সময়সীমাকে, বিপদ সীমা বা “রেড লাইন” বলে উল্লেখ করেছেন। শাহীন বলেন “ তারা যদি এই সময়সীমা বাড়ায়, তার মানে তারা দখল বাড়াচ্ছে। এর ফলে আমাদের মধ্যে অনাস্থা দেখা দেবে। এই দখল অব্যাহত রাখার ইচ্ছা যদি তাদের থাকে তা হলে এর ফলে প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জবাবে বলেছেন কাবুলে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ছাড়াও আরও অতিরিক্ত লোককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।