শরীফ উল হক
ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডিএবং ভয়েস অফ আমেরিকা
সতের জন শিক্ষার্থী। ছোট্ট একটি ক্লাসরুম। তাতে কি? চোখে স্বপ্ন, সাথে অদম্য মনোবল। সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কাছে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায়, সেই চেষ্টায় ২০০৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু। বলছি ‘জাগো ফাউন্ডেশন’ এর কথা। ‘জাগো’র প্রতিষ্ঠাতা করভি রাকশান্দ। মুলত পথ শিশু যারা টাকা খরচ করে স্কুলে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না তাদের নিয়ে কাজ করে ‘জাগো’। বিনামুল্যে শিক্ষাদান করা হয় ‘জাগো’র স্কুল গুলোতে।
বাংলাদেশের প্রধান শিক্ষা মাধ্যম বাংলা, কিন্তু প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে ইংরেজীও জানতে হবে। ভিত্তি মজবুত করা দরকার শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই। সেই লক্ষ্যে ‘জাগো ফাউন্ডেশনে’র স্কুল গুলোতে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী মাধ্যমেও পাঠদান করা হয়। মূলত তরুণ শিক্ষকরা এখানে কাজ করেন। কারন নতুন নতুন সব ধারনা, সৃষ্টিশীলতা’র উদ্ভাবক তরুন প্রজন্ম। শুধু দরকার তাদের সঠিক প্রয়োগের জায়গা। সেই সুযোগ করে দিচ্ছে ‘জাগো’।
সারা বাংলাদেশে ‘জাগো ফাউন্ডেশনে’র পরিধি বাড়াতে আগ্রহী। তাই খোলা হচ্ছে নতুন শাখা। সম্প্রতি ঢাকার বাইরে বান্দরবানে প্রথম শাখা খোলা হয়েছে। টেকনাফে স্কুলের আরও একটি শাখা খোলার প্রক্রিয়া চলছে। প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে ঢাকা থেকে শিক্ষকদের নিয়ে যাওয়া সম্ভব না, সেখানে পাঠদান করা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিশুরা ঢাকার অনুরূপ শিক্ষা গ্রহণ করছে।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অভিভাবকের আর্থিক দৈন্যতার কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে তারা আগ্রহী হন না। আর্থিক কারণে যেন শিশুরা ঝড়ে না পড়ে, তাই তাদের অভিভাবকদের জন্যও কাজের ব্যবস্থা করে ‘জাগো ফাউন্ডেশন’। এতে করে যেমন একটি পরিবার সচ্ছলতার মুখ দেখছে তেমনি ঐ পরিবারের শিশুটি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যেন স্কুলকে ভয় না পায় সেভাবেই সাজানো হয় ‘জাগো’র স্কুলগুলো। শিক্ষার্থীদের হাতে আঁকা ছবি দেয়ালে আর ক্লাসরুমে বন্ধু সুলভ শিক্ষক। মুখস্থ করে নয়, অংশগ্রহণমূলক শিক্ষার মাধ্যমে সুশিক্ষা নিশ্চিত করে ‘জাগো’। খেলার মাধ্যমে এবং নতুন উদ্ভাবনী ধারণা দিয়ে পড়াকে মুখস্থ নয় আত্মস্থ করানোর চেষ্টা থাকে শিক্ষকদের মাঝে।
সতের থেকে প্রায় ৬০০জন শিক্ষার্থী। এই যাত্রায় অংশীদার তরু্ণ শিক্ষকরা, সাথে আছে ‘জাগো’। একদিন জাগবে বাংলাদেশ, জেগে উঠবে শিক্ষার আলোয় দেশের প্রতিটি শহর-গ্রাম।
Your browser doesn’t support HTML5