যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাস কত দ্রুত ছড়াচ্ছে, তা জানতে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব সনাক্তকরণ সরঞ্জাম

কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব সনাক্তকরণ সরঞ্জাম অর্থাৎ একটি কম্পিউটারযুক্ত মানচিত্র, যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাস কত দ্রুত ছড়াচ্ছে, তা বলে দিতে পারে। আপনি যদি কোনও মানচিত্রের দিকে তাকান এবং জানতে ইচ্ছুক হন যে, কোভিড-১৯ এর পর যুক্তরাষ্ট্রের কোন রাজ্যের কোন শহরে মহামারির প্রকোপ হানবে এবং কত শীঘ্রই সেটা ঘটবে, তাহলে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির দ্বারা পরিচালিত কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব সনাক্তকরণ সরঞ্জামটির সাহায্য নিন। এ বিষয়ে ভিওএ'র সংবাদদাতা এলিজাবেথ লির প্রতিবেদন থেকে জয়তী দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন যে, যদি সঠিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয় তবে এই মানচিত্রটি আগামী দিনগুলিতে রোগের হটস্পটগুলি দেখিয়ে দেবে।

জর্জিয়ার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির টুর্গে আয়ার এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান গবেষক। তিনি বলেন, "স্থানীয় পর্যায়ে মহামারীটির প্রতিক্রিয়া জানাতে, একটি প্রদত্ত কাউন্টিতে বা শহরে কী হারে এই রোগ ছড়াচ্ছে, তা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ"। জনসাধারণের জন্য উপলব্ধ, এই অনলাইন ম্যাপটি কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে কতটা মাত্রায় রোগ ছড়িয়েছে, সেই পরিস্থিতির বর্তমান চিত্ররুপ নয়-এটি ভাইরাসটি কতটা দ্রুত ছড়াচ্ছে তার সংক্ষিপ্তসার। মানচিত্রে যে রাজ্যের রঙ যত গাঢ় হবে, সেখানে কভিডের প্রকোপ হবে ততই মারাত্মক। অ্যালগরিদমে অন্তর্ভুক্ত করা তথ্যগুলিতে কভিডে-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এবং মৃত্যু, ভৌগোলিক অবস্থান, কর্মসংস্থানের হার, মুখে পরার মাস্কের আদেশ, প্রতিদিনের পরীক্ষার সংখ্যা এবং অন্যান্য আরও অনেক তথ্য রয়েছে।টুর্গে আয়ার আরও বলেন, "অন্যান্য যে কোনও মডেলিং সফটওয়ার যেগুলি পূর্বাভাস সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করা হয়, সেগুলিতে সঠিক অন্তর্ভুক্ত করলে যেমন সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়, এই কম্পিউটারযুক্ত মানচিত্রটির ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য।"

প্রতিটি কাউন্টির তথা জেলার তথ্য বিশ্লেষণ করে এই ধরণের পরিসংখ্যান তৈরি করতে গবেষকদের কয়েক দিন বা সপ্তাহ লেগে যাবে। তবে মেশিন লার্নিং অনেক দ্রুত গতিতে এই কাজ সম্পন্ন করে এবং প্রাদুর্ভাব সনাক্ত করার প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় করে তোলে।

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের জগপ্রীত ছটওয়াল বলেন, ভ্যাকসিন প্রদান পুরোপুরি ভাবে কার্যকরী থাকলেও কোভিড-১৯ এর আক্রমণ প্রতিহত করতে এই সনাক্তকরণ সরঞ্জামটি অর্থাৎ এই মানচিত্রটির কিন্তু এখনও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, “যদি কোভিড-১৯ এর নতুন স্ট্রেন আসে, এবং এই নতুন রূপগুলি প্রতিরোধ করতে যদি এই ভ্যাকসিনগুলি আর কাজ না করে, অর্থাৎ কিছু সময় পরে যদি ভ্যাকসিনগুলি ভাইরাসকে মোকাবিলা করতে না পারে, অথবা ভ্যাকসিনগুলি থেকে সুরক্ষার সময়সীমা যদি পার যায়, তাহলে, সেটা কখন ঘটবে? তবে যে কোনও সময় এটি হতে পারে, আমরা এখনও তা জানি না, এখন থেকে ১২ মাস কিংবা ১৮ মাস পরেও হতে পারে।

অন্যান্য দেশগুলিতে তথ্য সংগ্রহে নানা ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কারণে বর্তমানে এই সরঞ্জামটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই কার্যকরী হবে। গবেষকরা বলেছেন, পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া গেলে মহামারী মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আরও ভালভাবে পরিকল্পনা করতে এমনকি প্রাদুর্ভাব এড়াতে সহায়তা করার জন্য তারা ভবিষ্যতে, অন্যান্য দেশের জন্য সনাক্তকরণের এই ধরণের সরঞ্জাম তৈরিতে যথেষ্ট আগ্রহী হবেন।

Your browser doesn’t support HTML5

ভিওএ'র এলিজাবেথ লি'র প্রতিবেদনটি পড়ে শোনাচ্ছেন জয়তী দাশগুপ্ত