বাংলাদেশ বিমানের পাইলট নওশাদের মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। সকাল ৯টা ২০ মিনিটে বিমানের মাস্কাট থেকে ঢাকা ফেরা একটি যাত্রীবাহি ফ্লাইট ভারতে অবতরন করে নওশাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা তার কফিন গ্রহণ করেন। এই সময় বিমান বন্দরে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নওশাদের মরদেহ শাহজালাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বনানীতে তার বাড়িতে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকা ভবনে মরদেহ আনা হয়। বলাকা ভবনে সহকর্মীরা তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে দাফন করা হয় ঢাকার বনানীতে। মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম ৩০ আগস্ট ভারতের নাগপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান। তিন দিন এই হাসপাতালে তাকে লাইফ সপোর্টে রাখা হয়েছিল। এর আগে ২৭ আগস্ট ওমানের মাস্কাট থেকে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা ফেরার পথে মধ্যআকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিজি ০২২ ফ্লাইটটির নিয়ন্ত্রণ কো পাইলট ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিমকে বুঝিয়ে দেন। অনুরোধ করেন ফ্লাইটটি দ্রæত জরুরীভাবে অনুমতি নিয়ে কোথায়ও অবতরন করানোর জন্য। বিমানটি ছিলো তখন ভারতের আকাশে। নাগপুর বিমান বন্দরে অনুমতি মেলে অবতরণের। বিমানটি সঠিকভাবে অবতরণের কারণে ১২৪ জন যাত্রীর জীবন রক্ষা পায়।
কিন্তুু যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে পারলেও নওশাদ চলে গেলেন চিরতরে। নাগপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। মরদেহ দেশে আনার পর সহকর্মীরা তাঁর সাফল্য নিয়ে আবেগ আপ্লুত ছিলেন। তারা বলেন, এর আগেও বিমানের একটি আর্ন্তজাতিক ফ্লাইটের চাকা ফেটে যায় আকাশে উড়ার সময়। সেই ফ্লাইটটিকে নিরাপদে অবতরণ করিয়ে ১৫০ জন যাত্রীর জীবন রক্ষা করেছিলেন নওশাদ। কিন্তুু মানুষের জীবন বাচাঁনো পাইলট শেষ পর্যন্ত পরাজিত হলেন মৃত্যুর কাছে।
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁর মৃত্যু দেশের এয়ারলাইন্সের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। তিনি নওশাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।