দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে রেখে সংবিধানের যে ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়েছিল- তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষের আপিল খারিজ করে দেয়া হয়। এর ফলে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদে হাতে আর থাকছে না। ষোড়শ সংশোধনীর আগে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত ছিল। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদকে ওই ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পেলে প্রতিক্রিয়া জানাবে। বিরোধী দল বিএনপি রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। তবে এই রায়ের পরে সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুরো স্থাপিত হবে কিংবা হবে না- এ প্রশ্নে এ্যটর্নি জেনারেল বলেছেন, একটি শূন্যতার সৃষ্টি হলো।
ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতির অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। ১৯৭২ সালের সংবিধানে জাতীয় সংসদের হাতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে তা বাতিল করে দিয়ে প্রেসিডেন্টের হাতে ওই ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়। ১৯৭৮ সালে এক সামরিক ফরমান বলে জিয়াউর রহমানের সরকার বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের উপরে ন্যস্ত করে। আর এটি বজায় ছিল ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ষোড়শ সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত।
ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এসব নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন বিশিষ্ট আইনবিদ এবং সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।
বিশ্লেষকগণ মনে করেন, রাষ্ট্রের সব শাখার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখলেই শাসন ব্যবস্থা কার্যকরি ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
Your browser doesn’t support HTML5