বাংলাদেশ সরকার চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উৎপাদন বেশি এবং গুদামে স্থান সংকুলান না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাল রপ্তানি খুব ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। কারণ আমাদেরকে ভারত, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। মন্ত্রী জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই চাল রপ্তানি করা যাবে। কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না এই অভিযোগ সর্বত্র। কোন কোন স্থানে কৃষকরা ধান ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বছর এক বিঘা বোরো জমি চাষ করতে কৃষকের খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হয়েছে প্রতি বিঘায় ১৫ মণের মতো। হাটে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দরে ধান বিক্রি করতে পারছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় কৃষকের লোকসান হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। এই পটভূমিতে তাৎক্ষণিকভাবে সরকার চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। ধারণা করা হচ্ছে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। খাদ্য সংরক্ষণে গুদামের ধারণ ক্ষমতা ২১ লাখ টন। আরো ৮ লাখ টন ধারণ ক্ষমতার গুদাম নির্মণাধীন।
গত মাসের ২৬ তারিখ থেকে সরকারিভাবে ধান-চাল কেনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। এবার বোরো মৌসুমে সাড়ে ১২ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। বাংলাদেশের চাল রপ্তানির বাজার খুবই সীমিত। কারণ এই চাল অনেক ক্ষেত্রেই রপ্তানিযোগ্য নয়। আফ্রিকার কিছু দেশ ছাড়া প্রায় সব দেশের মানুষই আতপ চালের ভাত খেয়ে থাকেন। বাংলাদেশের বেশির ভাগই সিদ্ধ চাল। ২০১৪ সালে ১২ হাজার টন চাল শ্রীলঙ্কায় রপ্তানি করা হয়েছিল। দু’দফায় ২৫ হাজার টন চাল রপ্তানি করা হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকারি-বেসরকারিভাবে গত ১০ মাসে ২ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। পাইপলাইনে রয়েছে ৩ লাখ ৮০ হাজার টন। ২০১৭ সালের মে মাসে হাওরে আগাম বন্যায় ফসলহানির পর সরকার চালের আমদানি শুল্ক উঠিয়ে দেয়। এরপর গত ২ বছরে ৬০ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক কর বৃদ্ধি করা হয়েছে ৫৫ শতাংশ।
Your browser doesn’t support HTML5