বাংলাদেশে বিহারীদের মানবেতর জীবন-যাপন

১৯৭৪ সালে সম্পাদিত বাংলাদেশ-ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশে আটকেপড়া কয়েক লাখ উর্দু ভাষী বিহারী-যারা পাকিস্তানে ফেরত যাবার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন এবং পাকিস্তানও তাদের ফেরত নেবে বলে অঙ্গীকার করেছিল; কিন্তু পাকিস্তান তাদের ফেরত নেয়নি আজঅব্দি। ১৯৭২ সালে এবং এরপরের কিছুকাল রেডক্রসসহ কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নানা চেষ্টা-তদবির করলেও পাকিস্তান তাতে সাড়া দেয়নি। আবার বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক উদ্যোগেও কোনো সাড়া মেলেনি।
এই আটকেপড়া পাকিস্তানীদের স্থান হয় ঢাকা, রংপুর, সৈয়দপুরসহ কমপক্ষে ১০টি জেলার বিভিন্ন ক্যাম্প এবং এলাকায়। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের উচ্চতর আদালত ১৯৭১ সালের পরে জন্মগ্রহণকারীদের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার এবং ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার আদেশ দেয়। কিন্তু মানবেতর অবস্থায় জীবন-যাপনের পরিস্থিতির এতোটুকুও বদলায়নি।
ঢাকার মোহাম্মদপুরে আটকেপড়া পাকিস্তানী-যারা বিহারী হিসেবেই পরিচিত, তাদের বসবাস একটি ক্যাম্পে। জেনেভা ক্যাম্প নামে পরিচিত ওই এলাকায় সোমবার দীর্ঘ সময় অবস্থানকালে দেখা যায়, ছোট ছোট বস্তি ঘরে তাদের বসবাস। পানির অপর্যাপ্ততা, শৌচাগার ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সংকটসহ নানা সমস্যার মধ্যে তারা বসবাস করছেন। তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেলো-তাদের নিদারুন কষ্টের কাহিনী এবং পাকিস্তান সরকারের অঙ্গীকার ভঙ্গের বেদনার কথা।
আটকেপড়া পাকিস্তানীদের ব্যাপারে কর্মরত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান রিসার্স ইনিশিয়েটিভ, বাংলাদেশের প্রধান ড. মেঘনাগুহ ঠাকুরতা ভয়েস অফ আমেরিকাকে এ ব্যাপারে তার মন্তব্য দিয়েছেন।
এদিকে, এই সপ্তাহেই বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাকিস্তানের কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, পাকিস্তান ১৯৭৪ সালের চুক্তির কথা বলছে, অথচ নিজেরাই তা ভঙ্গ করছে। ঢাকা থেকে আমীর খসরু।

Your browser doesn’t support HTML5

বাংলাদেশে বিহারীদের মানবেতর জীবন-যাপন