“সে কখনো ক্লান্ত হয়না,” বললেন অলিম্পিক ব্যাডমিন্টনে স্বর্ণ-জয়ী ইন্দোনেশিয়ান রিহাইয়ুর পিতা

অলিম্পিক ব্যাডমিন্টনের দ্বৈত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মহিলা বিভাগের ফাইনালে স্বর্ণ পদক জয়ের পর পোজ দিচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ান আপ্রিয়ানি রিহাইয়ু (ডানে) এবং গ্রেসিয়া পোলি। আগস্ট ২, ২০২১- এএফপি

তেইশ বছরের আপ্রিয়ানি রিহাইয়ু এবং তাঁর অভিজ্ঞ পার্টনার গ্রেসিয়া পোলি ব্যাডমিন্টন-প্রেমী দেশটির জন্যে সোমবার টোকিও অলিম্পিকে প্রথম স্বর্ণ পদক জিতলেন। মহিলা বিভাগের দ্বৈত প্রতিযোগিতায়ও এটাই তাঁদের প্রথম সোনা জয়।  

অলিম্পিক ব্যাডমিন্টনের দ্বৈত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মহিলা বিভাগের ফাইনালে কন্যার ঐতিহাসিক বিজয় নিজের ঘরে বসে দেখেছেন আমেরুদ্দিন পোরা। আত্মীয় স্বজনরা তারই বাড়ির লিভিং রুমে হৈ চৈ করতে করতে সেই খেলা দেখেন।

তেইশ বছরের আপ্রিয়ানি রিহাইয়ু এবং তাঁর অভিজ্ঞ পার্টনার গ্রেসিয়া পোলি ব্যাডমিন্টন-প্রেমী দেশটির জন্যে সোমবার টোকিও অলিম্পিকে প্রথম স্বর্ণ পদক জিতলেন। মহিলা বিভাগের দ্বৈত প্রতিযোগিতায়ও এটাই তাঁদের প্রথম সোনা জয়।

আপ্রিয়ানির তেষট্টি বছর বয়সী বাবা পোরা এএফপিকে দেয়া মন্তব্যে বলেন, “বাইরে সকলেই আনন্দে চিৎকার করছিল, আমি নিজের ঘরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এজন্যে যে খেলা দেখা এবং প্রার্থনা একই সঙ্গে দুটোই যেনো ঠিকভাবে করতে পারি। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন। সে স্বর্ণ পদক পেল”।

ইন্দোনেশিয়ানরা আনন্দ উল্লাস করছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন স্বর্ণ পদকটি ১৭ই আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবসের উপহার।

পোরা বলেন তাঁর মেয়ে ২০১৫ সালে তাঁর মায়ের মৃত্যুর কথা স্মরণ করে খেলেছে। মায়ের মৃত্যু তাঁর মনে আরও শক্তি জুগিয়েছে এবং জিতেছে। কারণ মা তাঁকে পেশাজীবী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হতে উৎসাহিত করতেন।

টোকিও যাবার একদিন আগে রিহাইয়ু দক্ষিনপূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ সুলাওয়েসিতে মায়ের কবর জিয়ারত করতে যান এবং তার বাবার কাছ থেকেও দোয়া কামনা করেন।

এ সময় সেখানে থাকা এই ব্যাডমিন্টন তারকার আত্মীয়রা পোরার বাড়িতে আসেন এবং সকলেই দোয়া করেন।

একজন আত্মীয় বললেন, “সে যখনই কোন প্রতিযোগিতায় যায়, তার আগে সে গ্রামের বাড়িতে আসে। এটা একটা নিয়মের মতো হয়ে গেছে। দোয়া চাইতে আসে ”।

“সৃষ্টিকর্তা শেষ আমাদের প্রার্থনার পুরস্কার দিয়েছেন”।

রিহাইয়ু টোকিও পৌঁছানোর পর থেকে প্রতিদিন বাবাকে টেলিফোন করে কথা বলতেন এবং তাঁর জন্যে দোয়া করতে বলতেন।

তিনি বলেন সকলের দোয়া এবং তার কঠোর পরিশ্রম এই সাফল্য এনে দিয়েছে।

রিহাইয়ুর বাবা বলেন, “হোটেল থেকে বেরিয়ে যখনই সে খেলার মাঠে যেতো, আমাকে ফোন করে দোয়া করতে বলতো। আমি সব সময় তাকে বলতাম শান্ত থাকবে এবং সবকিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেবে”।

মেয়ে যেন আরও স্বর্ণ পদক জিততে পারে সেজন্যে তিনি তাকে পরামর্শ দেন- কোচের কথা শোন এবং কখনোই ক্ষুব্ধ হবে না।

তার বাবা বলেন, “সে সবসময়ই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। চর্চার সময় কখনোই ক্লান্ত হয় না”।

তিনি বলেন, “অন্যভাবে নেবেন না, আমি শুধু রিহাইয়ুর জন্যে দোয়া করি না, গ্রেসিয়ার জন্যেও দোয়া করি। ওদের দুজনের জন্যেই দোয়া করি। তাঁরা আমাদেরকে গর্বিত করেছে”।