ইসলামাবাদ – আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা সোমবার বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশে একটি স্কুলের বাইরে দুর্ঘটনাক্রমে যুদ্ধকালীন ফেলে যাওয়া একটি মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কমপক্ষে নয়জন ছাত্র নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
প্রাদেশিক গভর্নরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, লালপুর জেলায় এক ভুট্টা বিক্রেতার কাছে থাকা একটি পুরানো মর্টার শেল বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ভুট্টা বিক্রেতা মর্টার শেলটি থেকে ধুলো সরানোর চেষ্টা করেছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “একজন ভুট্টা বিক্রেতার কাছে থাকা একটি পুরানো মর্টার শেল বিস্ফোরণে নয়জন শিশু শহীদ এবং চারজন আহত হয়েছে”। কিন্তু ওই বিক্রেতার ভাগ্যে কি ঘটেছে, বিবৃতিতে সে সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে তিনিও আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে, গত নভেম্বরে উত্তর-পূর্ব কুন্দুজ প্রদেশের একটি বাড়ির ভিতরে যুদ্ধকালীন একটি বোমার বিস্ফোরণে চার মেয়ে এবং দুই ছেলেসহ একই পরিবারের নয়জন সদস্য নিহত হয়েছিল বলে জানা যায়। এ ঘটনায় আহত হয় আরও তিন শিশু। একটি শিশু নিজের অজান্তে অবিস্ফোরিত ওই বোমাটি পাশের মাঠে খুঁজে পেয়ে সেটিকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ এই মাসের শুরুতে রিপোর্ট করেছে, ২০০৫ সাল থেকে আফগান সংঘাতে ২৮,৫০০’রও বেশি শিশু মারা গেছে, যা বিশ্বব্যাপী নিহত সমস্ত শিশুর ২৭ শতাংশ বলে স্বীকৃত।
গত আগস্টে তালিবান আফগানিস্তান দখল নেয় এবং সেই মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অবশিষ্ট বিদেশী সেনা প্রত্যাহার, কার্যকরভাবে দেশটিতে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে। তবে ত্রাণকর্মীরা বলছেন, সংঘর্ষের সময়কার অবিস্ফোরিত অস্ত্র এবং পূর্ববর্তী যুদ্ধের ভূমিমাইন এখনো আফগান বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, আহত ও পঙ্গু করে চলেছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক সাহায্য গোষ্ঠীগুলি বলেছে, বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং চরম দারিদ্র্য এই বছর প্রায় ২.৪ কোটি আফগানকে খাদ্যাভাবে ফেলেছে, ফলে সেখানে ৫ বছরের কম বয়সী ৩২ লাখের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টির সম্মুখীন হয়েছে।