২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে দিল্লীতে ২৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে গণ ধর্ষণ এবং মৃত্যুর প্রতিবাদে গত বছর সারা ভারতে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে আসার পরে, মহিলাদের ওপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে আমাদের নতুন দিল্লীর সংবাদদাতা অঞ্জনা পাসরিচার জানান, দিল্লীর মূখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের ঠিক লাগোয়া একটি অপিস খোলা হয়েছে। সেখানে ৬জন মহিলা কর্মরত রয়েছেন। তারা অত্যাচারিত মহিলাদের ফোন কল ক্রমাগত গ্রহণ করছেন।
দিল্লীর ঐ রোমহর্ষক নৃশংসভাবে ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের ঘটনা এবং তার মৃত্যুর পরপরই সরকার টোল মুক্ত টেলিফোন নম্বার স্থাপন করে। এই হট লাইনে নজিরবিহীন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫শ টেলিফোন কল আসছে। আদ্ধেকেরও বেশি মহিলা যৌন হয়রানি অথবা বাড়ীতে নানা ভাবে অত্যাচারীত হবার অভিযোগ করছেন। পাঁচটি কলের মধ্যে একটি ধরা হছে “রেড কোড” অর্থাৎ ত মারাত্মক ধরণের অপরাধের কোঠায়। যার মধ্যে ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য হয়রাণি প্রচন্ড মারধর এবং নানা রকম অত্যাচার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
মহিলাদের অধিকার বিষয়ক সক্রিয়কর্মী খাদিজা ফারুকী এই কর্মসূচীর প্রধান তিনি বলেন এইদসব সমস্যা নতুন নয়। নতুন যা সেটা হচ্ছে এদের সংগে যে ধরনের অত্যাচার করা হত ঐ চক্রান্ত কেউ জা্নতে পারত না। কিন্তু এখন সেটা সরব হয়েছে।
ফারুকী বলেন, তাঁর ভাষায়, “আমার অভিজ্ঞতায় আমি যা ভাল দেখছি সেটা হচ্ছে, মহিলারা এখন দৃঢ়প্রত্যয়ী তারা চিরাচরিত ধারা বা লোকাচার থেকে বেরিয়ে আসছেন। আসলে, যৌন হয়রানি সম্পর্কে আমার কথা বলা উচিত চিত নয় কারন তাতে মহিলাদেরকে খারাপ ভাবে চিহ্নিত করা হবে।”
২০১২ সালে ডিসেম্বর মাসে নৃশংস গ্যাং রেপের ঘটনাটি সাড়া ভারতবর্ষে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তরুণ বয়সী প্রতিবাদকারীরা সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে আর সেটাই ছিল সন্ধিক্ষণ এবং সেই থেকেই ভারতে মাহিলাদের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে।
মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংস আচরণ এখনো বন্ধ হয়নি। শিউরে ওঠার মত ধর্ষণের কাহিনী এমন কি সংঘবদ্ধভাবে ভাবে ধর্ষণ এখনও চলছে। বাড়ির ভেতরে চলছে অত্যাচার যা এখনো উদ্বেগের কারন।
তবে নতুন যে শক্তিশালী কঠোর একটি আইন পাশ হয়েছে তাতে ঐ ধরনের অপরাধ সামান্য কমেছে। তবে বর্তমানে কুতষিত যৌনতা পূর্ণ ইংগীত করাকে দন্ডনীয় অপরাধ বলেই গন্য করা হয়।
ন্যাশনাল কমিশন ফর এম্পাওয়ারম্যান্ট অফ ইউম্যানের সদস্য রঞ্জনা কুমারী বলেন, তাঁর ভাষায় “বেশীর ভাগ ভারতীয় মহিলারা এখনো নানা ধরনের সামাজিক চাপ এবং আইনের চাপের মধ্যে রয়েছেন। তবে শহরের শিক্ষিত মেয়েরা এখন আরো সক্ষম ও সাহসী। মহিলারা যে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন সেটাই কিন্তু পরিবর্তনের লক্ষণ। আর মধ্যবিত্ত সমাজের শিক্ষিত আত্মবিশ্বাসী মহিলাদের নেত্রীত্ব গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। আজ আমরা এটাই প্রত্যক্ষ করছে আর তা ঘটতে চলেছে ।”
একজন ছাত্রী বললেন,
“আমার ক্লাসের ১৭,১৮ বছর বয়সীরা আরো সোচ্চার হয়েছে। মেয়েরা আরো আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। এটাই সঠিক সময় তাদের নিজের দায়িত্ব নেওয়ার।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, বর্তমানে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আরো বেশী অভিযোগ করা হচ্ছে এর একটি কারণ যে মহিলারা অভি্যোগ করলে তা নথিভূক্ত করা হচ্ছে যেখানে আগে অনুভূতি বিবর্জিত পুলিশ এবং বিচার বিভাগের কাজের গতি মন্থর হওয়ায় অনেকেই এ ব্যপারে নীরব থাকতেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কর্মক্ষেত্রে দুটো যৌন হয়রানীর খবর সংবাদের শিরনাম হয়েছে। প্রক্ষ্যাত একটি ম্যাগাজিনের সম্পাদক তরুন তেজপালকে প্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ম্যাগাজিনের কাজে গোয়ায় একটি হোটেলের এলিভেটারে কমবয়সী এক মহিলা সহকর্মীর শ্লীলতা হানীর অভিযোগ দায়ের করা হয়ে ছিল। অন্য আরেকটি হচ্ছে, সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ কে গাংগুলীর বিরুদ্ধে যৌন আসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়। তিনি এই অভিযোগ অবশ্য অস্বিকার করেছেন।
মহিলা সক্রিয় কর্মীরা বলেন, দু’টি ঘটনাতেই ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা জড়িত যা একবছর আগেও হয়ত প্রকাশ করা হত না। তবে এখন এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে এর আংশিক কারন হচ্ছে, মহিলাদের ইস্যুর প্রতি অনেকেই সংবেদনশীল
রঞ্জনা কুমারী বলেন, “এমন নয় যে প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করা হচ্ছে এবং সবগুলো অভিযোগই আদালতে নথিভুক্ত করা হচ্ছে। তবে যৌন নির্যাতনের প্রচুর ঘটনা আছে যার বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।”
ভারতীয় মাহিলা সক্রিয় কর্মীরা বলছেন, আর অনেক কাজ করার আছে। তারা আশংকা প্রকাশ করছেন যে দুই তৃতীয়াং ভারতীয় বাস করেন শহরতলী বা গ্রামে-গঞ্জে আর সেখানে পরিবর্তন খুবই ধীর গতি হবে।
দিল্লীর ঐ রোমহর্ষক নৃশংসভাবে ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের ঘটনা এবং তার মৃত্যুর পরপরই সরকার টোল মুক্ত টেলিফোন নম্বার স্থাপন করে। এই হট লাইনে নজিরবিহীন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫শ টেলিফোন কল আসছে। আদ্ধেকেরও বেশি মহিলা যৌন হয়রানি অথবা বাড়ীতে নানা ভাবে অত্যাচারীত হবার অভিযোগ করছেন। পাঁচটি কলের মধ্যে একটি ধরা হছে “রেড কোড” অর্থাৎ ত মারাত্মক ধরণের অপরাধের কোঠায়। যার মধ্যে ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য হয়রাণি প্রচন্ড মারধর এবং নানা রকম অত্যাচার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
মহিলাদের অধিকার বিষয়ক সক্রিয়কর্মী খাদিজা ফারুকী এই কর্মসূচীর প্রধান তিনি বলেন এইদসব সমস্যা নতুন নয়। নতুন যা সেটা হচ্ছে এদের সংগে যে ধরনের অত্যাচার করা হত ঐ চক্রান্ত কেউ জা্নতে পারত না। কিন্তু এখন সেটা সরব হয়েছে।
ফারুকী বলেন, তাঁর ভাষায়, “আমার অভিজ্ঞতায় আমি যা ভাল দেখছি সেটা হচ্ছে, মহিলারা এখন দৃঢ়প্রত্যয়ী তারা চিরাচরিত ধারা বা লোকাচার থেকে বেরিয়ে আসছেন। আসলে, যৌন হয়রানি সম্পর্কে আমার কথা বলা উচিত চিত নয় কারন তাতে মহিলাদেরকে খারাপ ভাবে চিহ্নিত করা হবে।”
Your browser doesn’t support HTML5
Your browser doesn’t support HTML5
২০১২ সালে ডিসেম্বর মাসে নৃশংস গ্যাং রেপের ঘটনাটি সাড়া ভারতবর্ষে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তরুণ বয়সী প্রতিবাদকারীরা সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে আর সেটাই ছিল সন্ধিক্ষণ এবং সেই থেকেই ভারতে মাহিলাদের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে।
মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংস আচরণ এখনো বন্ধ হয়নি। শিউরে ওঠার মত ধর্ষণের কাহিনী এমন কি সংঘবদ্ধভাবে ভাবে ধর্ষণ এখনও চলছে। বাড়ির ভেতরে চলছে অত্যাচার যা এখনো উদ্বেগের কারন।
তবে নতুন যে শক্তিশালী কঠোর একটি আইন পাশ হয়েছে তাতে ঐ ধরনের অপরাধ সামান্য কমেছে। তবে বর্তমানে কুতষিত যৌনতা পূর্ণ ইংগীত করাকে দন্ডনীয় অপরাধ বলেই গন্য করা হয়।
ন্যাশনাল কমিশন ফর এম্পাওয়ারম্যান্ট অফ ইউম্যানের সদস্য রঞ্জনা কুমারী বলেন, তাঁর ভাষায় “বেশীর ভাগ ভারতীয় মহিলারা এখনো নানা ধরনের সামাজিক চাপ এবং আইনের চাপের মধ্যে রয়েছেন। তবে শহরের শিক্ষিত মেয়েরা এখন আরো সক্ষম ও সাহসী। মহিলারা যে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন সেটাই কিন্তু পরিবর্তনের লক্ষণ। আর মধ্যবিত্ত সমাজের শিক্ষিত আত্মবিশ্বাসী মহিলাদের নেত্রীত্ব গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে। আজ আমরা এটাই প্রত্যক্ষ করছে আর তা ঘটতে চলেছে ।”
একজন ছাত্রী বললেন,
“আমার ক্লাসের ১৭,১৮ বছর বয়সীরা আরো সোচ্চার হয়েছে। মেয়েরা আরো আত্মনির্ভরশীল হচ্ছে। এটাই সঠিক সময় তাদের নিজের দায়িত্ব নেওয়ার।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, বর্তমানে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আরো বেশী অভিযোগ করা হচ্ছে এর একটি কারণ যে মহিলারা অভি্যোগ করলে তা নথিভূক্ত করা হচ্ছে যেখানে আগে অনুভূতি বিবর্জিত পুলিশ এবং বিচার বিভাগের কাজের গতি মন্থর হওয়ায় অনেকেই এ ব্যপারে নীরব থাকতেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কর্মক্ষেত্রে দুটো যৌন হয়রানীর খবর সংবাদের শিরনাম হয়েছে। প্রক্ষ্যাত একটি ম্যাগাজিনের সম্পাদক তরুন তেজপালকে প্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ম্যাগাজিনের কাজে গোয়ায় একটি হোটেলের এলিভেটারে কমবয়সী এক মহিলা সহকর্মীর শ্লীলতা হানীর অভিযোগ দায়ের করা হয়ে ছিল। অন্য আরেকটি হচ্ছে, সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ কে গাংগুলীর বিরুদ্ধে যৌন আসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়। তিনি এই অভিযোগ অবশ্য অস্বিকার করেছেন।
মহিলা সক্রিয় কর্মীরা বলেন, দু’টি ঘটনাতেই ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা জড়িত যা একবছর আগেও হয়ত প্রকাশ করা হত না। তবে এখন এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে এর আংশিক কারন হচ্ছে, মহিলাদের ইস্যুর প্রতি অনেকেই সংবেদনশীল
রঞ্জনা কুমারী বলেন, “এমন নয় যে প্রতিটি ঘটনাই তদন্ত করা হচ্ছে এবং সবগুলো অভিযোগই আদালতে নথিভুক্ত করা হচ্ছে। তবে যৌন নির্যাতনের প্রচুর ঘটনা আছে যার বিচার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।”
ভারতীয় মাহিলা সক্রিয় কর্মীরা বলছেন, আর অনেক কাজ করার আছে। তারা আশংকা প্রকাশ করছেন যে দুই তৃতীয়াং ভারতীয় বাস করেন শহরতলী বা গ্রামে-গঞ্জে আর সেখানে পরিবর্তন খুবই ধীর গতি হবে।