কাতার বলছে ইসরায়েল ও হামাস এখন অস্ত্রবিরতি চুক্তির কাছাকাছি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় অপহৃত ইসরায়েলি পণবন্দিদের সমর্থকরা একটি চুক্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন।তেল আবিব, ইসরায়েল,১৩ জানুয়ারি,২০২৫।

মঙ্গলবার কাতার বলেছে যে গাজা ভূখন্ডে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি বিষয়ক আলোচনা এখন “চূড়ান্ত পর্যায়ে” এবং দুই পক্ষ সমঝোতার একেবারে “কাছাকাছি” রয়েছে।

সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিং’এ কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি চলমান এই আলোচনাকে ইতিবাচক ও ফলপ্রসু বলে বর্ণনা করেন তবে একই সঙ্গে চুক্তিটির ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত উচ্ছসিত হবার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন।

কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র লড়াই বন্ধের জন্য মাসব্যাপী প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছে এবং মঙ্গলবারের আলোচনায় চুক্তিটি চূড়ান্ত করার দিকে আলোকপাত করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার বলেন যে চুক্তিটি “শেষ পর্যন্ত সম্পদিত হবার দোর গোড়ায় রয়েছে”।

বাইডেন তাঁর পররাষ্ট্র নীতির সাফল্য তুলে ধরতে পররাষ্ট্র বিভাগে দেওয়া ভাষণে বলেন এই চুক্তি অনুযায়ী “ পণবন্দিদের মুক্তি প্রদান, লড়াই বন্ধ করা, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিধান এবং ফিলিস্তিনি জনগণ যারা, হামাসের শুরু করা যুদ্ধে মারাত্মক ভাবে দূর্ভোগের শিকার হয়েছে তাদের জন্য উল্লেখযোগ্য ভাবে মানবিক সহায়তা প্রদান করা”।

এই অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবের মূল বিষয়টি হচ্ছে যে নানান পর্বে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।

২০২৩ সালে জঙ্গিরা ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে তারা যাদেরকে পণবন্দি করে রেখেছে তাদের মুক্তি দিতে হবে এবং একই সঙ্গে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিবে।

ইসরায়েলি সৈন্যরা গাজা থেক পর্যায়ক্রমে সরে আসবে এবং কিছু ফিলিস্তিনি যারা এই সংঘাতে বাস্তচ্যূত হয়েছে তাদেরকে ফেরত আসতে দিতে হবে এবং ফিলিস্তিনি অসামরিক লোকজনের জন্য সহায়তা বাড়াতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এমএসএনবিসি’কে সোমবার বলেন যে “এই চুক্তির ব্যাপারে আগের যে কোন সময়ে চেয়ে” সংশ্লিষ্ট পক্ষরা কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং এখন সবটাই নির্ভর করছে হামাসের উপর।

সোমবার, বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান বলেন যে বাইডেনের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এই সব আলোচনা সম্পর্কে নব- নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টাদের অবহিত করেছেন। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ আলোচনার এই সর্বসাম্প্রতিক পর্যায়ে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর ইসরায়েলও গাজায় হামাসের উপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। ইসরায়েলি হিসেব মতে হামাসের আক্রমণে ১২০০ লোক নিহত হন এবং ২৫০ ‘এরও বেশি লোককে জিম্মি করা হয়।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসেব অনুযায়ী সেই থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৪৬,৫০০ লোককে হত্যা করা হয়েছে তবে ইসরায়েল বলছে যে এই মৃতের সংখ্যার মধ্যে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধারাও রয়েছে।

ভূমধ্যসাগর বরাবর সরু এক খন্ড ভূমি হচ্ছে গাজার অধিকাংশ , লড়াইয়ের সময়ে এই স্থানটি অবহেলিত হয় এবং মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়। সেখানকার ২৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যূত হয়ে পড়ে।

এই প্রতিবেদনে অবদান রেখেছেন হোয়াইট হাউসের ব্যুরো চিফ প্যাটসি উইদাকুসোয়ারা । কিছু তথ্য এসেছে এপি, এফপি ও রয়টার্স থেকে।