বৃহস্পতিবার এক সৌদি মানবাধিকার কর্মী সতর্ক করেছেন, ২০২৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ দেখতে সৌদি আরবে আসা ফুটবল ভক্তরা একটি “বুদবুদের” মধ্যে বসবাস করবেন, যা দেশটির বাস্তবতার প্রতিফলন নয়।
বুধবার ফিফা সৌদি আরবকে ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে নিশ্চিত করার পর সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো স্বীকার করেন, ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন দেখার আশায় দেশটির দিকে “সারা বিশ্ব নজর রাখবে।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে, বিশ্বকাপকে ঘিরে স্টেডিয়াম ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণে অভিবাসী কর্মীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। পাশাপাশি, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কাউন্সিলে সৌদি আরবে প্রচলিত নারী ও এলজিবিটিকিউপ্লাস সম্প্রদায়ের সদস্যদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় এমন আইনের সমালোচনাও হয়েছে।
লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এএলকিউএসটির কর্মী লিনা আল-হাথলুল বলেন, “পশ্চিমের মানুষ খুবই নিরাপদে থাকবে। তারা একটি বুদবুদের ভেতর থেকে সৌদি আরব দেখবে।”
তার বোন লুজেইন আল-হাথলুলকে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে এই আইন বাতিল হলেও তিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় সেখানে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছেন।
লিনা আল-হাথলুল দাবি করেন, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনে আজকের সৌদি আরব একটি “খাঁটি পুলিশি রাষ্ট্রে” পরিণত হয়েছে। ইনফ্যান্টিনোর সঙ্গে বিন সালমানের কর্মসূত্রে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণেই মূলত সৌদি আরব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আয়োজক হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
লিনা আল-হাথলুল বলেন, যুবরাজ “প্রকৃত অর্থেই একটি বুদবুদ তৈরি করেছেন, যেখানে মানুষ শুধু বিনোদনের অংশটিই দেখে, মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা তাদের চোখে পড়ে না।” “কেউ কারাগারে নির্যাতন বা ফাঁসি দেওয়ার চিত্র দেখছে না। শুধু একটি টুইট করার জন্যেও সেখানে মানুষকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়”।
“কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে”, বলেন আল-হাথলুল। তিনি উল্লেখ করেন, সৌদি নারীরা এখন পোশাকের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাধীনতা পাচ্ছেন। “তবে এগুলো প্রাতিষ্ঠানিক নয়, মৌলিক নয়, এবং এগুলো সবার জন্য প্রযোজ্য নয়”।