সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় শোক দিবস পালিত হচ্ছে। দেশটির ৩৯ তম প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথিড্রালে শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়ো হন।
গত সপ্তাহে ১০০ বছর বয়সে মারা যান কার্টার। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। কার্টার প্রায়ই ওয়াশিংটন প্রশাসনের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানিকতার সমালোচনা করতেন। তবে তার জীবিত পাঁচজন প্রেসিডেন্সিয়াল উত্তরসূরী- বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা, ডনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন তার শেষকৃত্যে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বাইডেন একটি শোকবার্তা পাঠ করেন।
মঙ্গলবার থেকে ইউএস ক্যাপিটলে পতাকা মোড়ানো কফিনে চিরনিদ্রায় শায়িত ছিলেন কার্টার। শোকার্ত জনতা তার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
শেষকৃত্যের পরে কার্টারকে তার নিজের রাজ্য (হোম স্টেট) জর্জিয়াতে ফিরে আনা হবে। সেখানে তাকে তার ৭৭ বছর বয়সী স্ত্রী রোজালিন কার্টারের পাশে একটি পারিবারিক কবরে শায়িত করা হবে। রোজালিন কার্টার ২০২৩ সালের শেষ দিকে মারা যান।
গত এক সপ্তাহ ধরে কার্টারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন চলেছে। অনেকে কীভাবে তিনি এক সময়কার সাধারণ এক চিনা বাদাম চাষী থেকে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত অশান্ত এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাসীন হন তা উল্লেখ করেছেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র ওয়াটার গেট রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে তাদের সামরিক পরাজয়ের বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল।
ডেমোক্র্যাট কার্টার মিশর ও ইসরায়েলের মধ্যে 'ক্যাম্প ডেভিড' শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছিলেন। ১৯৮০ সালে তার পুনর্নির্বাচনে কার্টার রিপাবলিকান রোনাল্ড রেগানের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। তবে প্রেসিডেন্ট-পরবর্তী জীবনে তিনি একজন স্বনামধন্য মানবতাবাদী হিসেবে আবির্ভূত হন। বিশ্বসংঘাত নিরসনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দীর্ঘ প্রচেষ্টার জন্য ২০২২ সালে তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার সময় বাইডেন কার্টারকে "দৃঢ়চেতা, সাহসী ও সহানুভূতিশীল মানুষ" হিসাবে অভিহিত করেন।
বাইডেন ছাড়াও সাবেক এই প্রেসিডেন্টের নাতি জেসন কার্টার এবং কার্টারের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও কার্টারের সময়কার হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ উপদেষ্টা স্টুয়ার্ট আইজেন শোকসভায় বক্তব্য রাখেন।
(প্যারিস হুয়াং, মিখাইলো কোমাদোভস্কি এবং কিম লুইস এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন।)