খালেদা জিয়া লন্ডন পৌঁছেছেন

লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমান। ৮ জানুয়ারি, ২০২৫।

উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন পৌঁছেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

লন্ডনের দ্য লন্ডন ক্লিনিকে তিনি চিকিৎসা নেবেন।

এর ফলে দীর্ঘদিন পর বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছে ৩ বারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বুধবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মায়ের দেখা পেয়ে এগিয়ে গিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন ছেলে তারেক ও পুত্রবধূ জুবাইদা। একে অপরের দেখা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা ও ছেলে উভয়েই।

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান খালেদা জিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

এর আগে রাত ৮টা ১২ মিনিটে গুলশানে তাঁর বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা দেন তিনি। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট পর খালেদা জিয়াকে নিয়ে রওনা হয়।

গুলশানের বাসা থেকে বিমানবন্দরের পথে পুরোটা সময় নেতাকর্মীদের বিদায়ী শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে রাত ১০টা ৫১ মিনিটে ৮ নম্বর গেট দিয়ে তাঁর মোটর শোভাযাত্রা বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

দলীয় সূত্র জানায়, এর আগে চেয়ারপারসনের অফিসের কর্মীরা তাঁর ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন।

পথে পথে হাজারো নেতাকর্মীর ভিড় পেরিযে বিমানবন্দরে যেতে তাঁর দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। তাঁকে বিদায় জানাতে গুলশান, কাকলী ও বিমানবন্দর সড়কে হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মী জড়ো হন। লন্ডনে যাওয়ার আগে তাঁকে এক নজর দেখার জন্য সন্ধ্যায় বহু লোক তার বাসার সামনে আসেন।

দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে যেতে কয়েক বছর থেকে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা এবং বিএনপি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে বিদেশ গিয়ে তার চিকিৎসা নেওয়ার পথ সুগম হয়।

২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করছেন তারেক রহমান। কারাবন্দী হওয়ার আগে সবশেষ ২০১৭ সালে লন্ডন সফরে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। তখনই শেষবার সরাসরি দেখা হয়েছিল মা-ছেলের।

লন্ডনে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাবেন তিনি।