অস্ট্রিয়ায় অভিবাসন-বিরোধী উগ্র ডানপন্থী নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ

অস্ট্রিয়ার ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির নেতা হারবার্ট কিকল। ফটোঃ ৬ জানুয়ারি, ২০২৫।

অস্ট্রিয়ার ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির নেতাকে নতুন সরকার গঠন করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশের প্রেসিডেন্ট। তিনি সফল হলে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই হবে উগ্র ডানপন্থিদের নেতৃত্বে অস্ট্রিয়ার প্রথম সরকার।

ফ্রিডম পার্টি অভিবাসনের বিরুদ্ধে, তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিয়ে সন্দিহান এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে না।

হারবার্ট কিকল-এর নেতৃত্বে ফ্রিডম পার্টি সেপ্টেম্বরে অস্টিয়ার সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী হয়। তারা ২৮.৮ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম স্থান দখল করে এবং প্রাক্তন চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী) কার্ল নেহামের-এর রক্ষণশীল অস্ট্রিয়ান পিপলস পার্টিকে দ্বিতীয় স্থানে নামিয়ে দেয়।

তবে পিপলস পার্টি এবং অন্যান্য দল কিকেলের নেতৃত্বে ফ্রিডম পার্টির সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে, অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার ভ্যান ডের বেলেন নেহেমারকে প্রথমে সরকার গঠন করতে আমন্ত্রণ জানায়। সরকার গঠনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং শনিবার নেহেমার পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেন।

সোমবার সকালে কিকেলের সাথে ঘণ্টাখানেক বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ভ্যান ডের বেলেন জানান, তিনি সরকার গঠনের জন্য ফ্রিডম পার্টিকে পিপলস পার্টির সাথে আলোচনা করতে বলেছেন।

অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার ভ্যান ডের বেলেন। ফটোঃ ৬ জানুয়ারি, ২০২৫।

ফ্রিডম পার্টি তাদের “দুর্গ অস্ট্রিয়া” শিরোনামের নির্বাচনী ইশতেহারে “আমন্ত্রিত নয় এমন বিদেশীদের পাল্টা অভিবাসন”-এর আহ্বান জানায়। ইশতেহারে শক্তভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে এবং জরুরী আইন জারীর মাধ্যমে রাজনৈতিক আশ্রয়ের অধিকার সাময়িক বাতিল করে একটি “সমজাতীয়” দেশ গড়ার কথা বলা হয়েছে।

ইউক্রেনের জন্য সাহায্যের বিরোধিতা

ফ্রিডম পার্টি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে পশ্চিমা সামরিক সাহায্য দেয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে এবং জার্মানির উদ্যোগে ইউরোপিয়ান স্কাই শিল্ড ইনিশিয়েটিভ নামক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়।

কিকেল ব্রাসেলস-এর “এলিট” গোষ্ঠীর সমালোচনা করেছে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে কিছু ক্ষমতা অস্ট্রিয়ার হাতে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।

ফ্রিডম পার্টি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে ডানপন্থি পপুলিস্ট জোট “পেট্রিওটস ফর ইউরোপ” এর অংশ, যার মধ্যে হাংগেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান এবং নেদারল্যান্ডসের গির্ট ভিল্ডারস রয়েছেন, যার দল নেদারল্যান্ডসের সরকার নিয়ন্ত্রণ করে।

উগ্র ডানপন্থি আর রক্ষণশীলদের মধ্যে জোট সরকার গঠনের আলোচনা সফল হবার কোন গ্যারান্টি নেই, কিন্তু এটা ছাড়া বর্তমান সংসদে আর কোন পথও নেই। জনমত জরীপে দেখা গেছে, এই মুহূর্তে নতুন নির্বাচন হলে ফ্রিডম পার্টি আরও শক্তিশালী হবে।

প্রেসিডেন্ট ভ্যান ডের বেলেন বলেন যে, নতুন সরকারের দায়িত্ব সহজ হবে না।

“অর্থনৈতিক পরিবেশ কঠিন, অস্ট্রিয়ায় মন্দা চলেছে, বেকারত্ব বাড়ছে,” তিনি বলেন। “সব পদক্ষেপ হয়তো জনপ্রিয় হবে না, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।”