গাজায় আটক জিম্মিদের ওপর যৌন ও মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের শরীরের নানা অংশ আগুনের ছ্যাকা দেওয়া ও চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলেও তা অবজ্ঞা করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক নতুন প্রতিবেদনে এসব দাবি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের কাছে জমা দেওয়া হবে।
১০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও বিদেশি জিম্মিদের চিকিৎসা দিয়েছেন এমন চিকিৎসাকর্মী ও সেবাদাতাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এই জিম্মিদের বেশিরভাগই ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল-হামাসের সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি পেয়েছিলেন। আট জিম্মিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উদ্ধার করেছিল।
জিম্মিদের মধ্যে ৩০ জনেরও বেশি শিশু-কিশোর রয়েছে। তাদের কয়েকজনের শরীরে পোড়া ক্ষত, মারধর করার এবং উত্তপ্ত বস্তু দিয়ে নিশানা এঁকে দেওয়ার চিহ্ন পাওয়া গেছে। শনিবার দিনের শেষভাগে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির কাছে জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
কয়েকজন নারী অভিযোগ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে অপহরণকারীরা। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের দিকে বন্দুক তাক করে রেখে এ ধরনের নির্যাতন চালানো হয় বলে তারা জানান।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরুষদেরও মারধর করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাদেরকে অভুক্ত রেখে শরীরে চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছিল। তাদেরকে নির্জন স্থানে একাকী বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং বাথরুমে যেতে দেওয়া হয়নি। কাউকে কাউকে আঘাতের চিকিৎসা দেওয়া হয়নি ও অন্যান্য অসুস্থতাকে আমলে নেওয়া হয়নি।
জিম্মিদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার্থে তাদের নাম বা বয়স উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে। তবে রয়টার্স, অন্যান্য গণমাধ্যম ও জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখিত কয়েকজন জিম্মির বয়ানের সঙ্গে এই প্রতিবেদনের বর্ণনা মিলে যায়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালানোর সময় হামাস ২৫১ জিম্মিকে আটক করে। তারা বারবার এই জিম্মিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গাজায় এখনো আটক থাকা ১০০ জিম্মির মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখনো জীবিত আছেন বলে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যুদ্ধকালীন আটক হওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।