উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, তিনি 'কঠোরতম' যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নীতি বাস্তবায়ন করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় এক মাস আগেই দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প পুনরায় হোয়াইট হাউসের দ্বায়িত্বে ফিরে আসায় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের কূটনীতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তার ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য মোট তিনবার কিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিম-ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ বৈঠক খুব তাড়াতাড়ি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং ট্রাম্প ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের দিকেই শুরুতে মনোনিবেশ করবেন। তাছাড়া, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি উত্তর কোরিয়ার সমর্থন ট্রাম্পের কূটনৈতিক যোগাযোগ পুনরায় শুরুর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির পাঁচ দিনের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক শেষ হয়েছে শুক্রবার। সেখানে কিম যুক্তরাষ্ট্রকে "সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র, যারা কমিউনিজম বিরোধিতাকে অপরিবর্তনীয় রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে বিবেচনা করে," বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া-জাপানের মধ্যকার নিরাপত্তা কার্যক্রম 'আগ্রাসনের একটি বৃহৎ সামরিক ব্লকে" পরিণত হচ্ছে।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কিম বলেছেন, "পরিষ্কারভাবেই আমাদের কোন দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত, কী করা উচিত এবং কীভাবে করা উচিত এই বাস্তবতা সেই রাস্তাই বলে দিচ্ছে।" এই বক্তব্যে কিমের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কঠোর কৌশল এবং উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য আগ্রাসীভাবে পাল্টা পদক্ষেপ নেবার ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাটি।
কেসিএনএ যুক্তরাষ্ট্র বিরোধীতা কৌশল বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে, কিম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির অগ্রগতির মাধ্যমে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছেন এবং উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
এর আগে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে বৈঠকগুলি দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়েছিল যা ব্যক্তিগত সম্পর্কেও গড়িয়েছিল। যদিও ২০১৯ সালে উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে মনোমালিন্যে তাদের সেই আলোচনা আর আগায়নি।
গত মাসে কিম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অতীতের আলোচনা তার দেশের প্রতি ওয়াশিংটনের 'অপরিবর্তনীয়' শত্রুতাকেই কেবল নিশ্চিত করেছে। একারণে, পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধিকে বাইরের হুমকি মোকাবেলার একমাত্র উপায় বলে মনে করেন তিনি।