খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

উন্নত চিকিৎসার জন্য ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ইউএনবিকে বলেছেন, “ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) বিমানযাত্রার জন্য ফিট থাকলে (২০২৫ সালের) ৭ জানুয়ারি লন্ডন যেতে পারেন।”

এদিকে, কাতার এয়ারওয়েজের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে লন্ডনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ এক বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, লন্ডন সফরে খালেদার জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, কয়েকজন চিকিৎসক, বিএনপি নেতা, তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ও দুজন গৃহকর্মীসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সফরসঙ্গী হবেন।

বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয় ইতিমধ্যে তাঁর সফরসঙ্গীদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে বলে জানান ওই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে লন্ডনে পাঠানোর জন্য অন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০০৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে লন্ডনে তাঁর বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিবারসহ বসবাস করছেন।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ তাঁর সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর সাজা হয়।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাজা স্থগিত করে ৭৭৬ দিন পর খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি দিয়ে তাঁর গুলশানের বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। এসময় তিনি দেশত্যাগ করতে পারবেন না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।

এ বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়া পুরোপুরি মুক্তি পান।

৬ অগাস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক গেজেটে বলা হয়, বাংলাদেশ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি এ আদেশ দিয়েছেন।

সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “যেকোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও স্থগিত মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।”