মঙ্গলবার গাজা যুদ্ধের মধ্যে যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেম আরও একবার সীমিত আকারে বড়দিন পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরের এই ফিলিস্তিনি শহরে সাধারণত বড়দিনের সময় যে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়, এ বছর তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি কোথাও। প্রতি বছর উৎসবমুখর আলোকসজ্জা ও অতিকায় গাছ বসিয়ে ম্যাঙ্গার স্কয়ার সজ্জিত করা হলেও এবার এসব অনুপস্থিত। প্রতি বছর এই ছুটির দিন উদযাপনের জন্য চত্বরে অসংখ্য পর্যটক ও তরুণদের ব্যান্ড জমায়েত হলেও এবার তাদেরকে দেখা যায়নি।
ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী নেটিভিটি চার্চের কাছে প্রতিবন্ধক বসিয়েছে। যেখানে যিশুর জন্ম হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়, ঠিক সেই অবস্থানেই এই গির্জাটি নির্মাণ করা হয়েছে। চার্চের কাছেই এক কর্মীকে ময়লার বিন পরিষ্কার করতে দেখা যায়।
বড়দিনের উৎসব বাতিল এই শহরের অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত হিসেবে এসেছে। বেথলেহেমের আয়ের ৭০ শতাংশই পর্যটন খাত থেকে আসে, যার সিংহভাগই বড়দিনের মৌসুমে উপার্জন হয়। মেয়র অ্যান্টন সালমান জানান, শহরে বেকারত্বের হার ৫০ শতাংশের আশেপাশে, যা পশ্চিম তীরের বাকি অংশের গড় বেকারত্বের হারের চেয়ে (৩০ শতাংশ) অনেক বেশি। এই তথ্যের উৎস হিসেবে তিনি ফিলিস্তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কথা উল্লেখ করেন।
ফিলিস্তিনি পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিরিয়েস কিমসিয়েহ জানান, করোনাভাইরাস মহামারির আগে, ২০১৯ সালে বড়দিনের সময় প্রতি বছর এখানে ২০ লাখ মানুষের জমায়েত হোত, যা ২০২৪ সালে এসে এক লাখেরও নিচে নেমে এসেছে।
খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসে বেথলেহেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এই পবিত্র ভূখণ্ডের ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ খ্রিস্টধর্ম পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলে প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার, পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ৫০ হাজার এবং গাজায় এক হাজার ৩০০ মানুষ খ্রিস্টান।
গাজার যুদ্ধ পর্যটক ও পূণ্যার্থীদের এ অঞ্চলে আসতে নিরুৎসাহিত করছে। একইসঙ্গে, এই যুদ্ধের ফলে পশ্চিম তীরেও সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং জঙ্গিদের হামলায় ডজন-ডজন ইসরায়েলিও নিহত হয়েছেন এই পশ্চিম তীরে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।