সিরিয়ার নতুন নেতারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিয়োগ করলেন

সিরিয়ার বাশার আল-আসাদকে উত্খাতের পর জনগণ উম্মায়েদ চত্ত্বরে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের অনুমোদিত পতাকা নাড়ছেন। দামেস্ক, সিরিয়া, ২০ ডিসেম্বর,২০২৪ ।

সিরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা, সানা শনিবার জানিয়েছে যে সিরিয়ার নতুন শাসকরা বাশার আল আসাদকে উত্খাতের পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

সানা জানিয়েছে ক্ষমতাসীন জেনারেল কমান্ড পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে আসাদ হাসান আল-শিবানির নাম ঘোষণা করেছে। নতুন প্রশাসনের একটি সুত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে যে “ সিরিয়ার জনগণ শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের যে ইচ্ছা পোষণ করছে” এই পদক্ষেপ হচেছ তারই প্রতিফলন।

শিবানি সম্পর্কে তাত্ক্ষণিক ভাবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

সিরিয়ার বর্তমান শাসক আহমেদ আল-শারা শাসনভার গ্রহণের পর থেকেই বিদেশি প্রতিনিধিদলগুলির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি জাতিসংঘে সিরিয়া বিষয়ক দূত এবং যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের স্বাগত জানান।

আন্তর্জাতিক দূতদের সঙ্গে কূটনৈতিক ভাবে সম্পৃক্ত থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করার ইঙ্গিত দিয়ে শারা বলেন তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে পূনর্নিমাণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন লাভ। তিনি বলেন তিনি নতুন করে কোন সংঘাতে জড়াতে চান না।

যুক্তরাষ্ট্র, অন্যান্য পশ্চিমি শক্তি এবং সিরিয়ার বহু নাগরিক এটাতে ‍খুশি যে শারার হায়াত আল-শাম বা এইচটিএস’এর নেতৃত্বে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করেছে কিন্তু এটা পরিস্কার নয় যে এই ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি কি কট্টর ইসলামি শাসন ব্যবস্থা আরোপ করবে নাকি নমনীয় হবে এবং গণতন্ত্রের পথে যাবে।

২০১৬ সালে শারা আল ক্বায়দার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা অবধি এইচটিএস আল ক্বায়দার অংশ ছিল।

১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার পর আসাদের কয়েক দশক ব্যাপী পারিবারিক শাসনের অবসান ঘটে এবং আসাদ পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

শারা, যিনি আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে সমধিক পরিচিত, তাঁর নেতৃত্বে বাহিনী তিন মাসের জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে যারা আগে থেকেই সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশে বিদ্রোহীদের একটি ছিঁটমহল শাসন করছিল।

২০১৩ সালে ওয়াশিংটন শারাকে সন্ত্রাসবাদি হিসেবে অভিহিত করে বলে যে ইরাকের আল-ক্বায়দা তাকে সিরিয়ায় আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করে ইসলামি শারিয়া আইন প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা শুক্রবার বলেন যে তাঁর মাথার মূল্য যে এক কোটি ডলার ধার্য করা হয়, ওয়াশিংটন তা প্রত্যাহার করছে।

এই যুদ্ধে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারান, এই যুদ্ধ আধূনিক যুগে সব চেয়ে বড় শরণার্থী সংকট সৃষ্টি করে এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনীতি কপর্দকশূন্য হয়ে পড়ে।