বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশেষ প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিডিআর হত্যাকাণ্ড বিষয়ে বিশেষ প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, "কমিটি বিডিআর বিদ্রোহের বিষয়ে একটি বিস্তৃত তদন্ত পরিচালনা করবে, তবে পুনঃতদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্তটি আদালতের এখতিয়ারভুক্ত"।

এই কমিটিতে সদস্য কতজন হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এ কমিটির সদস্য সংখ্যা পাঁচজন হতে পারে, সাত অথবা নয়জন হতে পারে।

সশস্ত্র বিভাগ থেকে সদস্য বেশি থাকবে বলেও জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "এই মর্মান্তিক ঘটনার সব দিক উন্মোচনের জন্য কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হবে।"

এই কমিটি তৈরিতে ক্রমশই চাপ তৈরি করছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা, এমনকি আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিল এই ব্যানারে, এই সংগঠনের অন্যতম নাম হাসনাত আব্দুল্লাহ এই কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

এর আগে গত ২ বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেছিলন, "বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক ও সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই। সঠিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ তদন্ত ও ন্যায় বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করা হবে।"

কী ঘটেছিল পিলখানায়?

২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি, তিন দিনব্যাপী 'বিডিআর সপ্তাহ' চলার সময়, পিলখানা সদর দপ্তরের দরবার হলে বাংলাদেশ রাইফেলস এর (বর্তমান বিজিবি) কয়েকশ সদস্য সশস্ত্র বিদ্রোহ করে। তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সরকার ও বিডিআর বিদ্রোহীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড জমা দেয়ার মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে। সেই ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে, বাকিগুলো বিদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা হয়।

হত্যা মামলার বিচারে, ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া, ২৭৭ জন অভিযুক্ত ব্যক্তি খালাস পান।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জন বিদ্রোহীকে তিন মাস থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত, বিভিন্ন মেয়াদে এবং প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

অন্যদিকে, বিদ্রোহের ৫৭টি মামলায় ৫ হাজার ৯২৬ জন বিডিআর জওয়ানকে চার মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।