দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলকে সামরিক আইন জারির চেষ্টার অভিযোগে অভিশংসন করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটির জন্য বিচারকদের অনুমোদন পেতে হবে।
শনিবারের ভোটাভুটিতে ১২ জন রক্ষণশীল আইনপ্রণেতা ইয়ুনকে অভিশংসনের জন্য বিরোধী পক্ষের সাথে যোগ দেন। ইয়ুন তার পাঁচ বছরের মেয়াদের মাত্র অর্ধেক শেষ করেছেন। তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে সাংবিধানিক আদালত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত অভিশংসনের মাধ্যমে ইয়ুনের ক্ষমতা স্থগিত থাকবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু। ভোটাভুটির কয়েক মিনিট আগে ইয়ুনের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টি অভিশংসনের বিরোধিতা করলেও তার সদস্যদের জন্য অবাধে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। গত সপ্তাহে তারা এই প্রচেষ্টা বর্জন করেছিল। এই গোপন ভোটের যুগপত সিদ্ধান্তই মূলত ইয়ুনের ভরাডুবির কারণ।
চূড়ান্ত পর্যায়ের ভোট গনণায় এই সিদ্ধান্তের পক্ষে ২০৪ টি ভোট আর বিপক্ষে যায় মাত্র ৮৫টি।
ফলাফল ঘোষণার পর জাতীয় পরিষদের বাইরে প্রায় হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে।
কোরিয়ান ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের ফেলো লি সাং-সিন বলেন, “বিশ্ববাসী বন্ধুরা, দয়া করে দেখুন এবং শিখুন। এভাবেই আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করি।”
১৯৮০ সালে দক্ষিণ কোরিয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পর ইয়ুন প্রথম ডিক্রির মাধ্যমে ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করলে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আইনপ্রণেতারা এই আদেশ বাতিল করে দেন।
সামরিক আইনের ডিক্রি জারির জন্য শুরুতে ক্ষমা চাইলেও বৃহস্পতিবারের ভাষণে ইয়ুন “শেষ পর্যন্ত লড়াই” চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেন। এই পদক্ষেপকে আইনগতভাবে ন্যায়সঙ্গত বলে অভিহিত করে, বিরোধী আইনপ্রণেতাদের কাছে একটি "কঠোর বার্তা" হিসেবে এটি প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেন ইয়ুন। উত্তর কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল বলে অভিযোগ তুলেন তিনি বিরোধী দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে । তিনি চরম দক্ষিণ পন্থিদের এই দাবিরও প্রতিধ্বণি তোলেন যে এপ্রিল মাসে আইন পরিষদের নির্বাচনে কারচুপি করা হয়।
অভিশংসিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ইয়ুন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।