তালিবান মন্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্প্রসারণ নিয়ে উদ্বেগ

তালিবানের শরণার্থী ও পুনর্বসন মন্ত্রী খলিল-উর- রহমান হাক্কানীর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সারিবদ্ধ ভাবে রয়েছে তালিবান সমরযানগুলি। সারানা, আফগানিস্তান, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪।

সম্প্রতি আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) একটি শাখার হাতে তালিবানের এক মন্ত্রীর হত্যাকান্ড ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আর একই সঙ্গে তা সে দেশের বর্তমান তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির সংঘাত বৃদ্ধির ও ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আফগানিস্তানের রাজধানীতে তালিবনের শরণার্থী ও পুনর্বাসন বিষয়ক মন্ত্রী খলিল-উর- রহমান হাক্কানী বুধবার তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় আত্মঘাতী বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন কর্মীসহ নিহত হন।

২০২১ সালের আগস্টে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৫৮ বছর বয়সী হাক্কানি ইসলামিক স্টেট- খোরাসান বা আইএসকে-র সর্বোচ্চ লক্ষ্যবস্তু হয়ে ছিলেন। আত্মঘাতী বোমা হামলায় গোষ্ঠীটি এ পর্যন্ত অন্তত ৮ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বালখ ও বাদাখশান প্রদেশের গভর্নররাও রয়েছেন।

তালিবান কর্তৃপক্ষ বারবার দাবি করেছে, তাদের নিরাপত্তা অভিযানগুলো আফগানিস্তানে আইএস-কে ‘কে কার্যকরভাবে হ্রাস করেছে। কর্তৃপক্ষ সমালোচকদের প্রমাণ সরবরাহ করতে বা আফগান জনগণের মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপস্থিতি সম্পর্কে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

হাক্কানী হত্যার পর ইসলামিক স্টেট এর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চ্যানেলগুলো আবারও তালিবানের দাবিকে উপহাস করে বলেছে, সর্বসাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলাটি দেশটিতে গোষ্ঠীটির উপস্থিতি এবং তাদের ইচ্ছা মত হামলা চালানোর সক্ষমতার প্রমাণ।

তালিবান মন্ত্রীর ওপর প্রাণঘাতী হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য করা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিরত থেকেছে।

রাশিয়ার প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট এর কার্যক্রম সম্পর্কে মস্কোর উদ্বেগ তুলে ধরেন।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক বার্ষিক কান্ট্রি রিপোর্টেও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য আফগানিস্তানে বহুজাতিক গোষ্ঠীগুলো যে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “ তালিবানের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও যে আফগানিস্তানের মাটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করতে বা যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য ব্যবহার করা হবে না, ইসলামিক স্টেট এর খোরাসান প্রদেশ ( আইএসআইএস-কে) এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান(টিটিপি)-র মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দুর্বল আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি এবং অসম সুরক্ষা পদ্ধতির সুযোগ নেওয়া অব্যাহত রেখেছে যা এ ধরণের অভিযানের জন্য আরও অনুকুল পরিস্থিতি তৈরি করে”।