বাংলাদেশের কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
তার স্বামী সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তিন বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে চলা একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সংগীতশিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্বামী ও দুই মেয়ে জারা সারোয়ার ও জিশা সারোয়ারকে রেখে গেছেন।
১৯৫২ সালের ২১ নভেম্বর বরিশালের এক সংগীতপ্রেমী পরিবারে জন্ম নেওয়া পাপিয়া সারোয়ার ভারত সরকারের বৃত্তির মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীত শেখেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম এই বৃত্তি লাভ করেন।
এর আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে প্রখ্যাত গুরু আতিকুল ইসলাম, ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন ও জাহিদুর রহিমের কাছ থেকে তার প্রাথমিক সংগীত প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টসে (বাফা) নিয়মিত ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ার তার বর্ণাঢ্য সংগীত জীবনে রবীন্দ্রসংগীতে দক্ষতার জন্য ব্যাপক প্রশংসা এবং অসংখ্য স্বীকৃতি অর্জন করেছেন।
১৯৯৬ সালে তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের মাঝে তার জ্ঞান বিতরণের জন্য গীতোসুধা নামে একটি সংগীত দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তার গাওয়া আধুনিক গান ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ বাংলা সংগীতপ্রেমীদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
এ ছাড়া, নিয়মিত সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে টেলিভিশন জগতে সুপরিচিত ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন তিনি।
দেশের সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার, ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ এবং ২০২১ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।