ফিলিস্তিনিরা বলছে, গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী প্রশাসন গঠনের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করেছে ফাতাহ ও হামাস 

গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলার পর সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা (২ ডিসেম্বর, ২০২৪)

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মঙ্গলবার বলছেন, ফাতাহ ও জঙ্গি সংগঠন হামাস চলমান সংঘাত শেষে গাজার প্রশাসন প্রক্রিয়া নিয়ে একটি পরিকল্পনায় একমত হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ইসরায়েল-অধ্যুষিত পশ্চিম তীরের অংশবিশেষের প্রশাসকের দায়িত্ব পালনকারী সংগঠন ফাতাহ এবং ২০০৭ সাল থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা হামাস যৌথভাবে গাজা ভূখণ্ডের প্রশাসন পরিচালনার জন্য একটি কমিটি নিয়োগ দেবে। এই কমিটিতে ঊর্ধ্বে ১৫ জন রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ টেকনোক্র্যাট থাকতে পারেন।

কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চূড়ান্তের পর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় বেশ কয়েক মাস ধরে গাজার সংঘাত বন্ধের জন্য আলোচনা চললেও এখনো ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে ইসরায়েল ও লেবানন-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সফল হওয়ায় গাজার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগে গতিবেগের সঞ্চার হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতাকারীরা মত প্রকাশ করেন, এই চুক্তি ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে সহিংসতা ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহর মিত্র হামাসের হামলার পর যে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছে তা স্থায়ীভাবে অবসানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

ওই হামলায় হামাস প্রায় এক হাজার ২০০ ব্যক্তিকে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে। এখনো গাজায় প্রায় ১০০ জিম্মি আটক আছেন, যাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সোমবার হুশিয়ার দিয়ে তার সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে দোযখের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে” যদি তিনি ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের আগে সব জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া হয়।

গাজার পাল্টা হামলায় ইসরায়েল ৪৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছেন। তাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। এসব তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সংস্থা নিহতের সংখ্যা প্রকাশকালে বেসামরিক ও সামরিক ব্যক্তির সংখ্যা আলাদা করে উল্লেখ করে না। ইসরায়েল কোনো প্রমাণ না দিয়ে দাবি করেছে নিহতদের মধ্যে ১৭ হাজারেরও বেশি জঙ্গি সদস্য।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে। নাইকি চিং এতে অবদান রেখেছেন।