সিরিয়ার বিদ্রোহীরা এক অতর্কিত হামলায় আলেপ্পো শহর ও এর পাশের একটি প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করার পর, সিরিয়ার সামরিক বাহিনী রবিবার হামার গ্রামীণ অঞ্চলে বাড়তি সেনা মোতায়েন করে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা শনিবার আলেপ্পোর বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয় এবং হামা শহরে প্রবেশের দাবি জানায়। নিরপেক্ষভাবে তাদের এই দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি রবিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক সফর করছেন। তিনি সংবাদদাতাদের জানান, তেহরান সিরিয়ার সরকার ও সেনাবাহিনীকে সমর্থন জানাবে।
সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম সানা ও একটি যুদ্ধ নিরীক্ষকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী রাতভর হামলায় বিদ্রোহীদের হামা প্রদেশের উত্তরের গ্রামাঞ্চলের দিকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সরকার-বিরোধী যুদ্ধ নিরীক্ষক দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, সরকারের মোতায়েন করা বাড়তি বাহিনী উত্তরের হামা গ্রামাঞ্চলে “শক্তিশালী সুরক্ষাবলয়” তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আসাদের বিবৃতি
দ্য অবজারভেটরি ও সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আল-ইখবারিয়াহও জানিয়েছে, রাশিয়া ইদলিব ও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে।
এই অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। শনিবার সন্ধ্যায় তার দেওয়া বক্তব্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
আসাদ জানান, সিরিয়া “জঙ্গি সংগঠন ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্থিতিশীলতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে”। তিনি আরও জানান, হামলার মাত্রা যেমনই হোক না কেন, সিরিয়া তাদেরকে পরাজিত করতে পারবে।
আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে বিক্ষোভ থেকে সর্বাত্মক সরকার-বিরোধী যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর ২০১৬ সালে আলেপ্পোয় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সংঘাতে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায়।
শুরুতে ধারণা করা হচ্ছিল, দেশের কর্তৃত্বভার হারাতে চলেছেন আসাদ। তবে আলেপ্পোর যুদ্ধে জয়লাভ করায় সিরিয়ার কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলো আসাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
অপরদিকে, বিরোধী সংগঠন ও তাদের বিদেশি পৃষ্ঠপোষকরা দেশের সীমান্ত-ঘেঁষা কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখে।