বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারত: জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ভারতের লোকসভায় পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের।

জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সরকার ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসসহ বিভিন্ন সময়ে সারা বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং মন্দির ও ধর্মীয় স্থানে হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা দেখেছে।

তিনি বলেন, ভারত সরকার এসব ঘটনা 'গুরুত্বের সঙ্গে' নিয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।

জয়শঙ্কর বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উৎসবের সময়ও মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের দুর্গাপূজা চলাকালে ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা এবং সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে চুরির ঘটনায় ভারত সরকার 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছে।

জয়শঙ্কর বলেন, এসব ঘটনার পর বিশেষ নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব উদ্‌যাপন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল।

কলকাতায় পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙ্গার চেষ্টা করছে বিক্ষোভকারীরা। ২৮ নভেম্বর, ২০২৪।

কলকাতায় ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো ও জাতীয় পতাকার অবমাননার নিন্দা বাংলাদেশ সরকারের

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরে উগ্রবাদী বিক্ষোভে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, "বাংলাদেশ সরকার যেকোনো ধরনের সহিংস কার্যকলাপের নিন্দা এবং ভারত সরকারকে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশন ও ভারতে বাংলাদেশের অন্য কূটনৈতিক মিশনের পাশাপাশি এর কূটনীতিক ও অ-কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।"

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের সামনে 'বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ' নামের একটি হিন্দু সংগঠনের আয়োজনে বিক্ষোভে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

বিবৃতিতে আরও বলা বলেছে, "বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল সমাবেশ ও বিক্ষোভে সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সীমানায় পৌঁছে যায়। তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ্য করে।"

যদিও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবে ডেপুটি হাইকমিশনের সকল সদস্য নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় রয়েছেন।