মিয়ানমারের চীন সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী

ফাইল ফটোঃ মিয়ানমারের লাওয়া ইয়াং-এর একটি ফাঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির একজন বিদ্রোহী। ২০ মার্চ, ২০১৮।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী চীন সীমান্তে উত্তর-পূর্ব মিয়ানমারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য শহর দখল করে লাভজনক খনিজ পদার্থ রেয়ার আর্থ উত্তলনের একটি কেন্দ্রর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য এটি বড় একটি ধাক্কা।

কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির কাছে কানপাইতির আপাত পতনেরফলে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে মাত্র একটি সীমান্ত শহর, মিউজের নিয়ন্ত্রণ থাকলো। এর ফলে খনিগুলোর সম্ভাব্য মুনাফা থেকে তারাবঞ্চিত হবে।

এই খনি চীনকে রেয়ার আর্থ খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে, যা বৈদ্যুতিক মোটর এবং বায়ু টার্বাইন, পাশাপাশি উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র এবং অনেক ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কেআইএ-র মুখপাত্র কর্নেল নাও বু বা সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র থেট সুই কেউই মন্তব্যের জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও সাড়া দেননি। তবে বেশ কয়েকটি স্থানীয় গণমাধ্যম গত সপ্তাহে কানপাইতির পতনের কথা জানিয়েছে।

চলমান গৃহযুদ্ধ এবং সামরিক বিধিনিষেধের কারণে সাংবাদিকদের ভ্রমণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে, তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা টেলিফোনে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, কেআইএ-র এক সদস্য পর্বতের মধ্য দিয়ে চীনে যাওয়ার সুড়ঙ্গে কেআইএ-র পতাকাউঁচিয়ে রেখেছেন। এই ভিডিও স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। অন্যান্য ক্লিপে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দেখা যায়, যেগুলো কেআইএ দখল করেছে বলে দাবী করা হয়।

অং সান সুকির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে। এর ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী দ্বারা সংগঠিত দীর্ঘ-প্রতিষ্ঠিত সশস্ত্র মিলিশিয়াদের সাথে তীব্র লড়াই শুরু হয়, যারা আরও স্বায়ত্বশাসনের জন্য কয়েক দশক ধরে লড়াই করছে।

তিনটি শক্তিশালী মিলিশিয়ার একটি জোট ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবরে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করার পর তাতমাদাও নামে পরিচিত এক সময়ের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গত বছর বেশ কয়েকটি নজিরবিহীন পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষ করে চীন সীমান্তের পূর্বাঞ্চলে এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে।

এরপর থেকে জাতিগত ভিত্তিতে সংগঠিত অন্যান্য মিলিশিয়ারা এতে যোগ দেয়, যার মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কাচিনের কেআইএ-ও রয়েছে।