শনিবার কপ২৯’এ ধনী রাষ্ট্রগুলি জলবায়ু-অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি করে তা এখন ৩০ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন। এর ফলে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা দেখা দিয়েছে। এর আগের একটি প্রস্তাব উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলি এই বলে নাকচ করে দেয় যে তা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রতিক্রিয়া মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট নয়।
জাতিসংঘের এই জলবায়ু বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন শুক্রবার শেষ হবার কথা ছিল কিন্তু তা একদিন বাড়ানো হয় কারণ প্রায় ২০০টি দেশের আলোচকরা আগামি দশকের জন্য বিতর্কিত অর্থায়ন পরিকল্পনার ব্যাপারে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। এই চুক্তি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হতে হবে।
দুই সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলনের মূল বিষয়টি হয়ে ওঠে ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলির আর্থিক দায় নিয়ে বৈশ্বিক বিতর্ক। ঐতিহাসিক ভাবে এই সব রাষ্ট্রের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে বিশাল পরিমাণ গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ ঘটে থাকে, তাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের কাছেই ক্ষতিপূর্ণ চাওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়।
বহু উন্নয়নশীল ও দ্বীপ রাষ্ট্রের আলোচকরা জাতিসংঘের প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেন। তারা বলেন এই প্রক্রিয়া বিশ্বে উষ্ণায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগিয়ে আসছে না। তারা শনিবার বিকেলে কিছুক্ষণের জন্য সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করেন।
এটা এখনও পরিস্কার নয় যে তারা ২০৩৫ সাল নাগাদ প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব চূড়ান্ত ভাবে মেনে নেবে কীনা।
ফিজির উপ-প্রধানমন্ত্রী বিমান প্রসাদ বলেন, তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন,“অর্থের প্রশ্ন উঠলেই এটা বরাবরই বিতর্কিত হয়, কিন্তু আমরা আশা করছি আজ রাতেই আমরা চুক্তি সম্পাদন করতে পারবো”।
কপ২৯’এর সভাপতি মুখতার বাবায়েভ দেশের প্রতিনিধিদের প্রতি তাদের মতপার্থক্য নিরসনের আহ্বান জানান।
শুক্রবার স্বাগতিক দেশ আজারবাইজান যে প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করেছিল, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলি তা নাকচ করে দেয়। ওই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও উন্নয়নশীল দেশগুলির বার্ষিক অর্থায়নের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি ডলার।
রুদ্ধ-দ্বার আলোচনা সম্পর্কে অবগত পাঁচটি সুত্র বলছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্মত হয়েছে যে তারা ৩০ হাজার কোটি ডলার বার্ষিক অর্থায়নে সম্মত। এর মধ্যে দুটি সুত্র জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনও একই মত পোষণ করে।
ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্র এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের মুখপাত্র উভয়ই এই আলোচনার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল এবং ব্রিটেনের জ্বালানি মন্ত্রনালয়কে মন্তব্যের অনুরোধ জানালে তারা তাত্ক্ষণিক ভাবে সাড়া দেয়নি।
নতুন এই লক্ষ্যটি উন্নত দেশগুলির আগের প্রতিশ্রুতির স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছে যেখানে ২০২০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার কথা ছিল। সেই লক্ষ্য দু বছর পরে ২০২২ সালে মেটানো হয় এবং তা ২০২৫ সালে শেষ হচ্ছে।