ইউক্রেনীয় অঞ্চলে নিঃসরণ নিয়ে রাশিয়ার দাবিতে কপ২৯-এ প্রতিবাদ

ইউক্রেনের মানচিত্র

এই সপ্তাহে রাশিয়া জাতিসংঘে তাদের সাম্প্রতিক গ্রীনহাউস গ্যাস ইনভেন্টরি রিপোর্টে তাদের দখলকৃত ইউক্রেনের অঞ্চলগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর ফলে কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের ও সক্রিয়বাদিদের মধ্যে প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়।

মস্কোর এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এসেছে যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার দিকে চেয়ে আছেন। এ শান্তি আলোচনায় বিস্তীর্ণ অঞ্চলটির ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে।

ইউক্রেনের উপ-পরিবেশ মন্ত্রী ওলগা ইউখিমচুক রয়টার্সকে বলেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি যে রাশিয়া আন্তর্জাতিক মঞ্চ ব্যবহার করছে, তাদের কার্যকলাপকে বৈধতা দেওয়ার জন্য, আমাদের ভূখণ্ডে তাদের দখলকে বৈধ করার জন্য।"

তিনি বলেন, ইউক্রেন জাতিসংঘের প্রধান জলবায়ু সংস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন বা ইউএনএফসিসিসি-র কর্মকর্তাদের সাথে এই বিরোধ সমাধান করতে বলার জন্য যোগাযোগ করছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউএনএফসিসিসি প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার পাঠানো মন্তব্যের জন্য অনুরোধের কোনও জবাব দেননি।

বিষয়টি হল রাশিয়ার ২০২২ সালের জাতীয় গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন রিপোর্ট, যা মস্কো ৮ নভেম্বর ইউএনএফসিসিসি-তে জমা দিয়েছে। রয়টার্স দ্বারা পর্যালোচিত ওই প্রতিবেদনে রাশিয়া বলেছে, তারা তাদের ৮৯টি অঞ্চলের মধ্যে মাত্র ৮৫টি অঞ্চলের জন্য তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে, "কারণ দোনেস্ক, লুহান্সক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চলগুলির জন্য ভূমি ব্যবহারের মৌলিক তথ্য অনুপস্থিত। রাশিয়া এই অঞ্চলগুলো ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দখল করে।

রাশিয়া ইতোমধ্যেই তাদের শেষ কয়েকটি প্রতিবেদন ইউএনএফসিসিসি-র কাছে জমা দেওয়ার সময় ২০১৪ সালে অধিকৃত ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অঞ্চল থেকে নির্গমন গ্যাসের বিষয়টি তাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়াও, রাশিয়া ২০২০ সালে জাতিসংঘের গ্লোবাল বায়োডাইভার্সিটি ফ্রেমওয়ার্কে ক্রাইমিয়ার ভূমি উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করেছে।

ইউক্রেনের পরিবেশ মন্ত্রী স্বিতলানা গ্রিঞ্চুক এই সপ্তাহের শুরুতে কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিনিধিদের কাছে বক্তৃতার সময় বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের অঞ্চল নিয়ে রাশিয়ার প্রতিবেদন বিশ্ব জলবায়ু প্রচেষ্টার অখণ্ডতাকে ক্ষুন্ন করে।

ইউখিমচুক রয়টার্সকে বলেন, এই উদ্বেগটি মূলত পর্তুগাল এবং আজারবাইজানের আয়তনের চেয়েও বড় অঞ্চলে দ্বিগুণভাবে নির্গমন হিসাব করার ঝুঁকির কারণে আসছে।

তিনি বলেন, "এটি আমাদের এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে আসবে যে প্যারিস চুক্তির অধীনে সঠিক প্রতিবেদন না থাকলে আমরা আমাদের কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না।"

সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ল এর ক্লাইমেট অ্যান্ড এনার্জি প্রোগ্রামের পরিচালক, নিকি রিশ বলেন, এই বিরোধটি প্রকাশ করছে কীভাবে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কাজ থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে।