আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৫৩ আসামীর বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্র শিবিরের মামলা

ঢাকায় হাই কোর্ট ভবন। ফাইল ফটো।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৫৩ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাতজন নেতাকর্মী।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগ দেওয়ার পর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, আজকে সাতটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেখানে চারজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গু হয়েছেন বা অঙ্গ হারিয়েছেন।

"একজন সাড়ে তিন বছর গুম থাকার পর এবং একজন সাড়ে তিন মাস গুম থাকার পর ফিরে এসেছেন। কামারুজ্জামান নামের একজন ২০১৭ সালে নিখোঁজ হয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাতটি অভিযোগ আলাদা আলাদাভাবে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে," আল নোমান বলেন।

শিবিরের এই নেতা বলেন, সংগঠনটির সহায়তায় এখনো পর্যন্ত মোট ১৭টি অভিযোগ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৬টির ভুক্তভোগী ছাত্রশিবিরের কর্মী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে “গণহত্যার” অভিযোগ ওঠে। ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠন করে এবং তাজুল ইসলামকে চিফ প্রসিকিউটার নিয়োগ করে।

তাজুল ইসলাম ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ‘আমার বাংলাদেশ’ বা এবি পার্টির একজন সিনিয়র নেতা। এবি পার্টি মূলত জামাতে ইসলামী দলের কয়েকজন প্রাক্তন নেতার তৈরি।

ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১’এর মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামাতে ইসলামী নেতাদের বিচারের সময় তাজুল ইসলাম অভিযুক্তদের পক্ষে কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেন।

সরকার পতনের পর শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যার মতো অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে জামাতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের বিচার করা হয়।

তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল বহাল রাখা হয়।