গাজা যুদ্ধে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু: জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর

গাজা ভূখণ্ডের মধ্যাঞ্চলে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসস্তুপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে শিশুরা। ফটোঃ ৭ নভেম্বর, ২০২৪।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর শুক্রবার বলেছে, তারা যাচাই করে দেখেছে যে, গাজা যুদ্ধে নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। একে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মৌলিক নীতি ও আদর্শের পদ্ধতিগত লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে এর নিন্দা করেছে।

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলে ও হামাসের সংঘাতের প্রথম সাত মাসে নিহতদের হিসাব করেছে জাতিসংঘ। উল্লেখ্য, এই সংঘাত এক বছরেরও বেশি সময় আগে শুরু হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর যাচাই করেছে, সংঘাতের প্রথম সাত মাসে নিহতের সংখ্যা ৮১১৯ জন। এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৩ মাস ধরে চলা সংঘাতে ৪৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে; অর্থাৎ প্রথম সাত মাসে নিহতের সংখ্যা অনেকটা কম।

তবে, নিহতদের বয়স ও লিঙ্গ নিয়ে জাতিসংঘের তথ্য ফিলিস্তিনিদের দাবিকেই সমর্থন করছে যে যুদ্ধে নিহতদের একটা বড় অংশই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর ৩২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনের পাশাপাশি এক বিবৃতিতে বলেছে, অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্য ইঙ্গিত করছে “প্রভেদ ও আনুপাতিকতাসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মৌলিক নীতির পদ্ধতিগত লঙ্ঘন হয়েছে।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “বিশ্বস্ত ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগের ক্ষেত্রে যথাযথ বিবেচনা করা একান্ত অপরিহার্য এবং এরই মধ্যে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা জরুরি।”

প্রতিবেদনটিতে উঠে আসা তথ্য নিয়ে ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা যাচাই করেছেন যে, কনিষ্ঠতম নিহত হল একদিন বয়সী একটি ছেলে এবং জ্যেষ্ঠতম নিহত হলেন ৯৭ বছর বয়সী একজন নারী।

নিহতদের গড়পড়তা ৪৪ শতাংশই শিশু। ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে, তারপর রয়েছে ১০-১৪ বছর বয়সীরা।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিসংখ্যান থেকে ব্যাপকভাবে স্পষ্ট হয়েছে, গাজা ছিটমহলে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে আপাত ব্যর্থতা রয়েছে।