যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনঃ হ্যারিস-ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের লড়াই এখন ভোটারদের হাতে

আমেরিকার নির্বাচনে সবচেয়ে আগে নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচ গ্রামের ভোটকেন্দ্র চালু হলে এক বাসিন্দা তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আসেন (৫ নভেম্বর, ২০২৪)

মঙ্গলবার লাখ লাখ আমেরিকান নাগরিকের ভোটে নির্ধারণ হবে দেশটির পরবর্তী নেতা কে হবেন—ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস না সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

নির্বাচনের দিনের আগের জরিপগুলোতে দুই প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। সার্বিকভাবে কে বিজয়ী হবেন, তা নির্ধারণে কয়েকটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

উভয় প্রার্থী সোমবার পেনসিলভেনিয়ায় কয়েক দফা প্রচারণা চালিয়েছেন। অন্যতম দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে সবার দৃষ্টি পেনসিলভেনিয়ার দিকেই ছিল। দুই প্রার্থী একে অপরের খুব কাছে, পিটসবার্গ এলাকায় প্রচারণা চালান। উভয় প্রার্থীই এ সময় জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

মঙ্গলবারের ভোটের দিনের আগেই ৮ কোটি ১০ লাখ আমেরিকান ডাকযোগে বা সশরীরে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আগাম ভোট দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের ভোটাররা দুই প্রার্থীর বিষয়ে দ্বিবিভাজিত রয়েছেন। ভোটের আনুষ্ঠানিক দিনটির আগে সব বড় বড় গণমাধ্যমের নির্বাচনের ফল সংক্রান্ত পূর্বাভাসে এই বিশ্লেষণের প্রতিফলন ঘটেছে।

পরিসংখ্যানগত ভুলকে মাথায় রেখে পাওয়া শেষ মুহূর্তের জরিপের ফলগুলোতে দেখা গেছে, হ্যারিস-ট্রাম্পের দ্বৈরথের ফল মূলত দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোই নির্ধারণ করবে।

এবিসি নিউজের জরিপ বলছে ট্রাম্প সাতটির মধ্যে পাঁচটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে জয়লাভ করবেন। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট হ্যারিসকে চারটিতে এগিয়ে রেখেছে। অপরদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে ট্রাম্প চার অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে, হ্যারিস দুইটিতে এবং অপরটিতে সমানে সমানে লড়াই হবে।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পপুলার ভোটে নয় বরং ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে নির্ধারণ হয়। এ প্রক্রিয়ায় ৫০টি অঙ্গরাজ্য একই কাতারে এসে প্রতিযোগিতা করে। ৪৮টি অঙ্গরাজ্যে পপুলার ভোটের বিজেতার কাছে সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট চলে যায়। নেবরাস্কা ও মেইনের ক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্য ও কংগ্রেশনাল ডিসট্রিক্টের ভোট গণনাকেও আমলে নেওয়া হয়।

প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার ওপর ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা নির্ভর করে। এ কারণে, সবচেয়ে বড় অঙ্গরাজ্যগুলো জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। ৫৩৮ ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ন্যুনতম ২৭০টি ভোট পেলে একজন প্রার্থী নিজেকে প্রেসিডেন্ট পদের দাবিদার হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। শুধু পেনসিলভেনিয়াতেই ১৯টি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে।

জরিপ মতে, হ্যারিস বা ট্রাম্প ৪৩টি অঙ্গরাজ্যে উল্লেখযোগ্য বা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে রয়েছেন এবং তারা সহজেই ২০০ বা তার চেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল ভোট পাবেন। যদি এসব অঙ্গরাজ্যে কোনো অঘটন না ঘটে, তাহলে বাকি সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যই নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করবে। এই অঙ্গরাজ্যগুলোতে নিয়মিত সমাবেশ করেছেন হ্যারিস ও ট্রাম্প, কিন্তু বাকি অঙ্গরাজ্যগুলোকে তারা উপেক্ষা করছেন বললেই চলে।

এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি ও রয়টার্স থেকে নেওয়া হয়েছে।