ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা মঙ্গলবার মিয়ানমারের জান্তার ‘সামরিক উপকরণ, সরঞ্জাম এবং তহবিল’ সংগ্রহর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
ব্রিটেনের মতে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে বিমানের জ্বালানি ও সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্য ছিল ‘বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলা চালানোর সক্ষমতা’ সীমিত করা।
এতে বলা হয়, আগস্ট মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রেকর্ড করা সর্বোচ্চ সংখ্যক বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে কয়েক ডজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং যা ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ সমতুল্য।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু কির সরকারকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পশ্চিমা দেশগুলোর সর্বসাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা সামরিক জান্তাকে বিমানের জ্বালানি সরবরাহ বা নিষিদ্ধ পণ্য সরবরাহের সাথে জড়িত ছয়টি সংস্থাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ২০২৩ সালে সামরিক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিমান জ্বালানি সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে।
জুনিয়র ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, “বেসামরিক অবকাঠামোতে বিমান হামলাসহ মিয়ানমারজুড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তা অগ্রহণযোগ্য এবং নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এর প্রভাব অসহনীয়।”
লন্ডনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের নাগরিক সমাজ ও স্থানিয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সহায়তার জন্য ব্রিটেন ১৯৫ কোটি ডলারের বেশি দিয়েছে।
এতে বলা হয়, লড়াইয়ের কারণে ৩৪ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে; ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন এবং মিয়ানমার এখন "গুরুতর ও সংগঠিত অপরাধের বিস্তারের শিকার হচ্ছে।"
জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী এবং জান্তার অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য লড়াইরত পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস বছরব্যাপী বিশাল অভিযানের ঢেউয়ে সওয়ার হওয়ার পর সর্বসাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
বিশ্লেষক ও এএফপির হিসেব অনুযায়ী, তারা প্রায় ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা থেকে জান্তাকে হটিয়ে দিয়েছে, যা বসনিয়ার আয়তনের সমান। এই অগ্রগতির ফলে বিদ্রোহীরা প্রাক্তন রাজকীয় রাজধানী মান্দালয়ের কাছে পৌঁছে গেছে।