রাশিয়ায় পারমাণবিক হামলার পাল্টা জবাবের ব্যাপক মহড়া শুরু

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস সার্ভিসের বিতরণ করা ভিডিও থেকে নেয়া স্থির চিত্রে রুশ সামরিক বাহিনীকে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টাক ক্ষেপণাস্ত্রর নিয়ন্ত্রণ কক্ষে দেখা যাচ্ছে। ফটোঃ ২৯ অক্টোবর, ২০২৪।

ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার দেশটির পরমাণু শক্তির ব্যাপক মহড়া শুরু করেছেন। এই শক্তি প্রদর্শনীর প্রধান দিক ছিল পারমাণবিক হামলার পর পাল্টা জবাবের মহড়া ।

সামরিক নেতাদের সাথে এক ভিডিও কলে পুতিন বলেন, এই মহড়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদক্ষেপের অনুকরণ করবে এবং এতে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ জানান, এই মহড়ার উদ্দেশ্য “শত্রুর পারমাণবিক হামলার জবাবে কৌশলগত আক্রমণাত্মক বাহিনীর ব্যাপক পারমাণবিক হামলা চালানোর” অনুশীলন করা।

ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমাদের সমর্থন বাড়াতে বাধা দিতে বারবার পরমাণু অস্ত্রের কথা বলা পুতিন মঙ্গলবার জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার "দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার নির্ভরযোগ্য গ্যারান্টার" হিসেবে রয়ে গেছে।

তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারকে “তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চূড়ান্ত ও চরম পদক্ষেপ” হিসেবে দেখে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেস সার্ভিসের বিতরণ করা ভিডিও থেকে নেয়া স্থির চিত্রে প্লেসেটস্ক লঞ্চ প্যাড থেকে ইয়ার্স আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে। ফটোঃ ২৯ অক্টোবর, ২০২৪।

আকাশ, সমুদ্র আর স্থল

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মঙ্গলবারের মহড়ার অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনী কামচাটকা উপদ্বীপের কুরা টেস্টিং রেঞ্জের প্লেসেটস্ক লঞ্চ প্যাড থেকে ইয়ার্স আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

নভোমস্কোভস্ক এবং ন্নিয়াজ ওলেগ পারমাণবিক সাবমেরিনগুলো ব্যারেন্টস সাগর এবং ওখোটস্ক সাগর থেকে পরীক্ষামুলকভাবে আইসিবিএম নিক্ষেপ করে। সে সময় পারমাণবিক সক্ষম টিইউ-৯৫ কৌশলগত বোমারু বিমান দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের অনুশীলন চালায়।

মন্ত্রণালয় জানায়, সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্রই তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছেছে।

গত মাসে রুশ নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো মিত্রদের সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়ার গভীরে হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে পশ্চিমের সরবরাহকৃত দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করতে দিলে তা নেটোকে তার দেশের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলবে।

তিনি পারমাণবিক মতবাদের নতুন একটি সংস্করণ ঘোষণা করে বার্তাটি আরও জোরদার করেন। এই নতুন তত্ত্ব অনুযায়ী, পারমাণবিক শক্তি-সমর্থিত কোন একটি অ-পারমাণবিক দেশ যদি রাশিয়ার ওপর আক্রমণ করে, তাহলে সেটা তার দেশের উপর যৌথ আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে - এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং কিয়েভের অন্যান্য মিত্রদের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা।