বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তাসলিমা নাসরিন যে কথা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সেটা অস্বীকার করেছ।
নারীবাদী লেখক নাসরিন গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক মন্তব্যে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস হিজবুত তাহরির এবং আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের মত “ইসলামী সন্ত্রাসী সংগঠনের” উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
তবে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর রবিবার (২৭ অক্টোবর) জানায়, এক্স-এ (প্রাক্তন টুইটার) নাসরিনের একটি পোস্ট তাদের “নজরে এসেছে।”
“তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে দাবি করেছেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুটি গ্রুপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তাঁর এই দাবি সত্য নয়,” প্রেস উইং-এর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে।
“উগ্রপন্থী সংগঠন হিযবুত তাহরীর এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সব উগ্রপন্থী সংগঠনের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে,” প্রেস উইং জানায়।
ডঃ ইউনূসের সরকার পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার প্রেক্ষিতে তাসলিমা নাসরিন এক্স-এ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
“ডঃ ইউনূস পাগল হয়ে গেছেন,” নাসরিন বলেন। “তিনি জামাতে ইসলামী আর তাদের ছাত্র সংগঠন শিবিরের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরানো দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়েছেন।”
“তিনি হিজবুত তাহরির, আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের মত ইসলামি সন্ত্রাসী সংগঠনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন,” বলেন নাসরিন, যিনি ১৯৯৪ সালে ঢাকায় ইসলামপন্থি সংগঠনগুলোর আন্দোলনের মুখে নির্বাসনে চলে যেতে বাধ্য হন।
তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, জঙ্গি সংগঠনের প্রতি সরকারের নীতির কোন পরিবর্তন করার পরিকল্পনা তাদের নেই।
“গত কয়েক দশকে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই দুটি গ্রুপসহ অন্যান্য উগ্রপন্থী সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকারের নেই,” বিবৃতিতে বলা হয়।
বাংলাদেশে সাতটি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ রয়েছে। তারা হলঃ হিজবুত তাহরির, আনসারআল্লাহ বাংলা টিম, আনসার আল ইসলাম, জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ, হারকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ, জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ, এবং শাহাদাত-এ আল-হিকমা।