যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চীন, রাশিয়া ও ইরানের, মিলেছে নতুন প্রমাণ

ভোটকর্মীরা সেফনার-ম্যাঙ্গো ব্রাঞ্চ গ্রন্থাগারে আগাম ভোটের সরঞ্জাম স্থাপন করছেন। সেফনার, ফ্লোরিডা। ফাইল ফটোঃ ২ আগস্ট, ২০২৪।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘুরিয়ে দিতে চীন, ইরান ও রাশিয়া আগ্রাসীভাবে আমেরিকান ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে নতুন প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বুধবার এমন দুটি হুমকির ব্যাপারে প্রতিবেদন পেশ করেছে গোয়েন্দা বিভাগ; সফটওয়্যার সংস্থা মাইক্রোসফট থেকে একটি ও সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা রেকর্ডেড ফিউচার থেকে অন্যটি। এই সব দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত সাইবার কর্মীদের ক্রমবর্ধমান ক্রিয়াকলাপের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া গেছে। এদের সকলের লক্ষ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের বুথে যাওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে জনমতকে প্রভাবিত করা।

মাইক্রোসফটের বক্তব্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে চীন-সম্পৃক্ত সাইবার কর্মীদের পক্ষ থেকে যারা গবেষকদের কাছে ‘স্প্যামোফ্লেজ’ বা ‘তাইজি ফ্লাড’ নামে পরিচিত।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, “চীনের প্রভাবিত করার অভিযান সম্প্রতি নতুন মোড় নিয়েছে। তারা বেশ কয়েকজন ডাউন-ব্যালট প্রার্থী ও কংগ্রেসের সদস্যের দিকে নজর দিয়েছে।” এই সংস্থা আরও উল্লেখ করেছে, চীন সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মকাণ্ড শুরু করেছে এবং কমপক্ষে চারজন উল্লেখযোগ্য রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাকে নিশানা করেছে তারা। এই আইনপ্রণেতারা বেইজিং সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

সর্ব সম্প্রতি চীন-সম্পৃক্ত একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে টেক্সাসের রিপাবলিকান মাইকেল ম্যাককলকে নিশানা করা হয়েছে এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান “ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার” করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।

গত মাসের শেষের দিকে আরেকটি স্প্যামোফ্ল্যাজ টেনেসির রিপাবলিকান সিনেটর মার্শা ব্ল্যাকবার্নকে নিশানা করেছিল বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। চলতি বছরের শুরুতে একই রকম প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছে; ৫ নভেম্বরে নির্বাচনে ব্ল্যাকবার্নের প্রতিপক্ষের হয়ে প্রচার করা হয়েছে।

আর যাদের নিশানা করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যালাবামার রিপাবলিকান প্রতিনিধি ব্যারি মুর। ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছেন। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান রিপাবলিকান মার্কো রুবিয়োকে নিশানা করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।

ওয়াশিংটনে চীনের দূতাবাস মাইক্রোসফটের প্রতিবেদনে তোলা অভিযোগগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

মাইক্রোসফট ও রেকর্ডেড ফিউচার তাদের রিপোর্টে সতর্ক করেছে, বেইজিং একা নয়।

প্রতিবেদনগুলিতে নির্দিষ্টভাবে সতর্ক করা হয়েছে, রাশিয়া-সম্পৃক্ত সাইবার কর্মীরা যারা গবেষকদের কাছে ‘স্টর্ম-১৬৭৯’ বা ‘অপারেশন ওভারলোড’ নামে পরিচিত, গত কয়েক মাস ধরে তাদের কর্মকাণ্ডের গতি বৃদ্ধি করেছে।

মাইক্রোসফটের রিপোর্ট বলছে, দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে “ইরান কর্তৃক পরিচালিত এক অনলাইন ব্যক্তিত্ব নিজেকে মিথ্যাভাবে আমেরিকান বলে পরিচয় দিতে শুরু করে এবং উভয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে সমর্থন করছেন বলে আমেরিকানদের এই ভোট বয়কট করার আহ্বান জানায়।”

চীনের মতো রাশিয়া ও ইরান বারবার দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার উদ্যোগের সঙ্গে তারা কোনও ভাবেই যুক্ত নয়।