রাষ্ট্রপতির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে যথাসময়ে গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীদার। এটা (বিএনপির সঙ্গে বুধবারের বৈঠক) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ। কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না তা সময়মতো আপনারা জানতে পারবেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের সম্ভাবনা নিয়ে সাংবাদিকদের বারবার প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম এ মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ সম্পর্কে আশ্বস্ত করে তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা সুস্থ আছেন এবং যথারীতি বৈঠক করছেন।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টার অবস্থানকে সরকার সমর্থন করে।
তিনি আরও বলেন, “আইন উপদেষ্টা ডঃ আসিফ নজরুল এর আগে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে যা বলেছেন, তার সঙ্গে সরকার একমত। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
সম্প্রতি মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তাঁর কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
কথোপকথনটি রবিবার (২০ অক্টোবর) মানবজমিনের রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’–এ প্রকাশিত হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “গত ৫ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন। এখন আড়াই মাস পর বলছেন, তাঁর কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই। এমন কথা বলা স্ববিরোধিতা।”
আসিফ নজরুল দাবি করেন, “তিনি (রাষ্ট্রপতি) মিথ্যাচার করেছেন, যা শপথ ভঙ্গের শামিল। তাঁর বক্তব্যে অটল থাকলে তিনি পদে থাকতে পারেন কি না তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।”
অবশ্য সমালোচনা ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়। রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে সোমবার বঙ্গভবনের পাঠানো এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, “ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার ওপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪–এ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্টের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টার ঘটনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার পর বুধবার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে বঙ্গভবনের সামনে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।