ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, সিনওয়ারের মৃত্যু গাজা যুদ্ধবিরতির সুযোগ করে দিতে পারে

২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় এক সমাবেশের সময় নিহত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের প্রতিকৃতি ধরে আছে এক ফিলিস্তিনি শিশু।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার মধ্য দিয়ে গাজায় এখনো বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে একটি চুক্তির নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চাপ দেয়া শুরু করেছে।

ইসরায়েল সিনওয়ারের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার পর রেকর্ড করা এক ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, শয়তানকে বড় ধরনের আঘাত হানা হয়েছে; হামাস আর কখনো গাজা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তিনি গাজার বাসিন্দাদের হামাসের অত্যাচার থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। ইসরায়েলি বিশ্লেষকরা বলছেন, সিনওয়ারের মৃত্যু জিম্মিদের মুক্তির নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

নেতানিয়াহু বলেন, কেউ অস্ত্র জমা দিয়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে নিয়ে এলে তাকে দেশ ছাড়তে ও বাঁচতে দেয়া হবে। তার কথায় হামাসের জীবিত সদস্যদের গাজা ছেড়ে তৃতীয় কোনো দেশে নির্বাসিত হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ইসরায়েল পলিসি ইন্সটিটিউটের শিরা এফ্রন বলেন, সিনওয়ারের মৃত্যু গাজায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।

এফ্রন বলেন, 'হামাস নেতাদের মধ্যে শেষ এবং ৭ অক্টোবরের হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তার প্রতীকী মৃত্যু ইসরাইলকে বিজয়বৃক্ষ থেকে নেমে আসার সিঁড়ি দিয়েছে এবং বলেছে, ঠিক আছে, আমরা যুদ্ধ জিতেছি। আমরা গাজার যুদ্ধ বন্ধ করতে পারি এবং একটি ভিন্ন বাস্তবতার দিকে যেতে পারি।

তবে হামাসের নেতা হিসেবে সিনওয়ারের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন এবং তিনি কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারবেন কিনা তা পরিষ্কার নয়। সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার বলে মনে হচ্ছে। তবে হামাসের মধ্যে তার ভাইয়ের মতো মর্যাদা নেই।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েল যদি তা করে তাহলে ইরান পাল্টা হামলা চালানোর অঙ্গীকার করেছে। একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বছরব্যাপী যুদ্ধের অবসানের যেকোনো অগ্রগতিকে দ্রুত গ্রাস করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।