একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই

সুজেয় শ্যাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

তার মেয়ে রূপা মঞ্জুরী শ্যাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর রাজধানীর সবুজবাগ বরদেশ্বরী শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

সুজেয় শ্যাম ক্যান্সার, উচ্চ ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।

তার মেয়ে জানান, গত সেপ্টেম্বরে তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানোর পর তার সংক্রমণ শুরু হয়।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এ সময় আইসিইউতে শয্যা খালি না থাকায় তাকে সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন সুজেয় শ্যাম। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানের সুরকার হিসেবে সম্মানিত তিনি।

গানটি ছিল “বিজয় নিশান উড়ছে ঐ”। এটি লিখেছিলেন গীতিকার শহিদুল আমিন এবং কণ্ঠ দিয়েছিলেন অজিত রায়; ১৯৭১ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্য তার মোট নয়টি গান গাওয়া হয়েছিল।

তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে "রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি", "আহা ধন্য আমার জন্মভূমি" এবং "আয়রে চাষি মজুর কুলি"।

১৯৪৬ সালের ১৪ মার্চ সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সুজেয় শ্যাম। বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ২০১৮ সালে একুশে পদক এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন।

তিনি হাছন রাজা (২০০২), জয়যাত্রা (২০০৪), অবুঝ বউ (২০১০) ও যৈবতী কন্যার মন (২০২১) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চারবার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।