বাংলাদেশে সহিংসতায় কোনো অজুহাত নয়, দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনায় কোনো অজুহাত চলবে না। সহিংসতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে হোক বা প্রতিবাদকারীদের দ্বারা সংঘটিত হোক, সহিংসতার কোনো অজুহাত গ্রাহ্য করা হবে না। একইসঙ্গে যারা সহিংসতার জন্য দায়ী তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।”

ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় বুধবার (১৬ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ওই সাংবাদিক দাবি করেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ থেকে ৮ অগাস্টের মধ্যে তিন হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। ৪০০টিরও বেশি থানায় হামলা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, ৫ অগাস্ট হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পরও যারা হামলা চালিয়েছে তাদের দায়মুক্তি দিয়ে জুলাই–অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা যাবে না।

সাম্প্রতিক দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপে গাওয়া একটি ইসলামিক গান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, অবশ্যই তারা বাংলাদেশসহ সব দেশেই ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, “ওই নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার মন্তব্য ফিরিয়ে নিচ্ছি এবং পর্যালোচনা করে আপনাদের কাছে এর উত্তর দেব।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৪ অক্টোবর (সোমবার) এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দিয়েছে, জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে যেসব ছাত্র-জনতা অংশ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা হয়রানি করা যাবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নবযাত্রা সূচিত হয়েছে। এ গণঅভ্যুত্থানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই থেকে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত সংঘটিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানসংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেফতার বা হয়রানি করা হবে না।”

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনার পর মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারপারসন জেড আই খান পান্না বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধের জন্য দায়মুক্তির কোনো সুযোগ নেই, “এখন যে প্রচেষ্টা চলছে তার সবই অবৈধ।”

আরেকজন মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধ থাকলে সেটি নির্দেশনা দিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার সুযোগ থাকে না।