বিএনপি ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন

চাকরিপ্রার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে ৪৪তম, ৪৫তম ও ৪৬তম বিসিএসের সব প্রক্রিয়াও বাতিলের দাবি জানিয়েছে দলটি।

বিএনপির পক্ষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি, যা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে একটি দলীয় কমিশনের অধীনে সম্পন্ন করা হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৭ সালে ২৭তম বিসিএসের ফলাফলের ভিত্তিতে নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, বিসিএস নিয়োগ বাতিলের নজির রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, একই প্রেক্ষাপটে ২৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল করা হয়েছিল এবং তৎকালীন সরকার পরবর্তীতে ভাইভা পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল।

৪৩তম বিসিএসের ক্ষেত্রে সরকার ২৭তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাত্র ২ মাস আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়াই ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনুগতদের নিয়োগ দিয়ে প্রশাসনে আওয়ামী প্রেতাত্মাদের আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ দেওয়া বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা মনে করি, এই নিয়োগ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অবিস্মরণীয় আত্মত্যাগের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।”

তিনি বলেন, “হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীকে বঞ্চিত করে দলীয় বিবেচনায় ও সুপারিশকৃত ৪৩তম বিসিএস বাতিল করতে দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।”

৪৩তম বিসিএস

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশের সব বিভাগীয় শহরে একযোগে ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি প্রিলিমিনারির ফলাফল প্রকাশিত হয়, যাতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ২২৯ প্রার্থী। ২০২২ সালের জুলাইয়ে পিএসসি লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০২৩ সালের ২০ অগাস্ট লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে, এতে উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৪১ জন।

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৪৩তম বিসিএস থেকে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। সিদ্ধান্ত অনুসারে, ২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার পদে এবং ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ১৬৩ জন ক্যাডার পদের মধ্যে সর্বোচ্চ শিক্ষা ক্যাডারে ৮০৩ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০ জন, কর ক্যাডারে ১০১ জন, তথ্য ক্যাডারে ৪৩ জন এবং সহকারী ডেন্টাল সার্জনে ৭৫ জনকে সুপারিশ করা হয়।