চীনের বিআরআই পরিকল্পনা সম্প্রসারণে জোর দিচ্ছে পাকিস্তান

পাকিস্তান ইসলামাবাদে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ইউরেশীয় দেশগুলোর সরকার প্রধানদের একটি বৈঠকের আয়োজন করে। (সৌজন্যেঃ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)।অক্টোবর ১৬,২০২৪।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বুধবার চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সম্প্রসারণের পক্ষে বলেছেন, এটি আঞ্চলিক বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলবে এবং “সংযুক্ত ইউরেশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি” তুলে ধরবে।

ইসলামাবাদে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সরকার প্রধানদের বার্ষিক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। নিরাপত্তা, রাজনীতি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে পশ্চিমা জোটের ভারসাম্য রক্ষার উপায় হিসেবে ২০০১ সালের রাশিয়া ও বেইজিং এসসিও প্রতিষ্ঠা করে।

এসসিও সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে শরিফ গ্লোবাল বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হিসেবে পাকিস্তানে অবকাঠামো প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগের প্রশংসা করেন এবং এর সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।

পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দিচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। অক্টোবর ১৬, ২০২৪।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের মতো ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলো… সড়ক, রেল ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে মনোনিবেশ করে সম্প্রসারণ করা উচিত যা আমাদের অঞ্চলজুড়ে সংহতি ও সহযোগিতা বাড়ায়”।

এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপকে স্থল ও সামুদ্রিক নতুন রুটের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে এক দশক আগে এক লাখ কোটি ডলারের উচ্চাভিলাষী বিআরআই নামে একটি বৈশ্বিক অবকাঠামো ও জ্বালানি বিষয়ক নেটওয়ার্ক চালু করে বেইজিং।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা সমালোচকরা এই পরিকল্পনাকে চীনের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন।তারা চীনা বিনিয়োগেরও সমালোচনা করে অভিযোগ করেন যে, তারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর অসহনীয় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বেইজিং এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আফগানিস্তান

কর্তৃপক্ষ এসসিও সমাবেশের জন্য ইসলামাবাদকে নিরাপত্তা অবরোধে রেখেছে; সাম্প্রতিক মারাত্মক জঙ্গি হামলার কারণে হাই-প্রোফাইল এই অনুষ্ঠানটিতে সুরক্ষার জন্য পাকিস্তানের রাজধানী ও এর আশেপাশে সেনাসহ প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে।ইসলামাবাদ বলছে, তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের অভয়ারণ্য থেকে পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত পলাতক ব্যক্তিরা এই সহিংসতা চালিয়ে থাকে ।

বুধবার শরিফ তার ভাষণে আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদের উদ্বেগ মোকাবিলার জন্য তালিবান সরকারের উপর চাপ দেয়ার কথা বলেছেন। তালিবান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশ দ্বারা স্বীকৃত নয়।তিনি উল্লেখ করেন, আঞ্চলিক সংযোগ এবং বাণিজ্যের সুযোগ পুরোপুরি পাওয়ার জন্য আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা এসসিও সদস্য দেশগুলোর জন্য অপরিহার্য ছিল।

তালিবান বার বার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে যে বিদেশী জঙ্গিরা প্রতিবেশি দেশগুলিকে হুমকি দেওয়ার জন্য আফগান ভূমি ব্যবহার করছে।