চীনের প্রধানমন্ত্রী লি পাকিস্তান সফর শুরু করেছেন

চীনের প্রিমিয়ার লি কিয়াং ইসলামাবাদের কাছে নূর খান সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছেছেন যেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। ফটোঃ ১৪ অক্টোবর, ২০২৪। (সৌজন্যে: প্রধানমন্ত্রী শরিফের দফতর)

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য সোমবার থেকে চার দিনের পাকিস্তান সফর শুরু করেছেন। চলতি সপ্তাহে ইসলামাবাদে সরকারের প্রধানদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বৈঠকেও তিনি যোগ দেবেন।

পাকিস্তানে সম্প্রতি ভয়াবহ বিদ্রোহী হামলার বাড়বাড়ন্তের পর সে দেশে উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে করাচিতে চীনের এক গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং এর ফলে চীনের দুইজন ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের রাজধানীর বাইরে এক সামরিক সেনা ঘাঁটিতে লি-কে অভ্যর্থনা জানান। তারপর, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে দুই নেতা তাদের নিজস্ব প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বৈশ্বিক ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে’র একটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল সিপিইসি। এটি চীনের অর্থায়নে চলা কয়েক কোটি ডলারের দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প।

পাকিস্তান সরকার ইসলামাবাদ ও পার্শ্ববর্তী সামরিক শহর রাওয়ালপিণ্ডিতে তিন দিনের গণ ছুটি ঘোষণা করেছে। স্কুল ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। লি-র সফর ও মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলা দুই দিবসীয় এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে “পুরো মাত্রায় নিরাপত্তা” সুনিশ্চিত করতে সৈন্য ও আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, লি গদরে সিপিইসি-নির্মিত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এটি আরব সাগরের গভীর জলভাগে চীন-নিয়ন্ত্রিত একটি বন্দর এবং গদর একটি উপকূলবর্তী শহর।

উদ্বোধন কেন ভার্চুয়ালি করা হবে তা নিয়ে কোনও পক্ষই মন্তব্য করেনি, তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, বিশেষ করে করাচিতে হামলার পর নিরাপত্তাগত ঝুঁকি ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত।

লি চীনের প্রথম প্রিমিয়ার যিনি ১১ বছরের মধ্যে প্রথমবার ইসলামাবাদ সফরে এসেছেন। শরিফ প্রশাসন বলছে, এই সফর সিপিইসি উন্নয়নের অগ্রগতিতে সাহায্য করবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণকে ত্বরান্বিত করবে।

চীন গত শতকে সিপিইসির অধীনে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। পাকিস্তানে রাস্তা, মহাসড়ক, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গদর জলবন্দর ও বিমানবন্দরের মতো বড় মাপের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে, পাকিস্তানে চীনের কর্মীদের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাগত হুমকি ও অন্যান্য ঝুঁকি থাকায় সিপিইসির অধীনে চীন তাদের ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে আগ্রহী হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সমালোচকরা।