তাঁতীবাজারে বিস্ফোরক দিয়ে পূজায় বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে আটক ৩

প্রতীকী ছবি

পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ‘পেট্রলবোমা’ নিক্ষেপের ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে আটক করেছে পুলিশ।

কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন জানান, "আটককৃতরা শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বোমা ফাটিয়ে প্রথমে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পূজায় অংশ নেওয়া দর্শনার্থীরা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করলে ছিনতাই শুরু করে। এরপর তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করলে তারা ছুরিকাঘাত করে দর্শনার্থীদের। এসময় তাদের তিনজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।"

এসআই লিটন আরও জানান, আহতদের চিকিৎসার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটকদের কাছে একটি ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ওসি মুহম্মদ ফজলুল কাদের চৌধুরী ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "পূজামণ্ডপের ঘটনায় আটক তিন জনকে ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।"

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা সমন্বিতভাবে ঘটনা ঘটার সঙ্গে-সঙ্গে প্রতিহত করেছে।"

পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। একজন এখনও পলাতক আছে, তাকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

প্রাথমিকভাবে তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে ঘটনাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে হয়েছে বলে মনে করছেন আইজিপি ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, "কয়েকজন যুবক জোর করে একজন নারীর গলার হার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সবার প্রচেষ্টার কারণে পারেনি।"

ওদিকে ঢাকার তাঁতীবাজারের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে হিন্দু ও সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের উপাসনালয়ের, বিশেষ করে দুর্গা পূজার এই উৎসবের সময়ে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভারত সরকার।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, "আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি ঢাকার তাঁতীবাজারের পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে এবং সাতক্ষীরায় যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটেছে।"

বাংলাদেশে পূজামণ্ডপে হামলা, হিন্দু মন্দির ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগুলো নিন্দনীয় ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

ভারত সরকারের উদ্বেগের বিষয়ে আইজিপি ময়নুল ইসলাম বলেন, "এটা নিয়ে তেমন কিছু বলতে চাই না। শুধু বলবো, এটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। এটা নিয়ে অন্য কারও উদ্বেগের কিছু নেই।"

"বাংলাদেশে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের নিজস্ব দায়িত্বের অংশ হিসেবে পালন করছি," বলে যোগ করেন ময়নুল ইসলাম।

(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেওয়া হয়েছে।)