সেনাপ্রধানের সঙ্গে বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

সেনাপ্রধানের সঙ্গে বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ। ছবি: আইএসপিআর

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রতিনিধিদল।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সেনাসদরে সেনাবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ করেন তারা।

এ সময় সেনাবাহিনীর প্রধান সমতলের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘শুভ প্রবারণা’ ও ‘কঠিন চীবরদান’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আর্থিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এ ছাড়া, ব্যক্তিগতভাবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎসবসমূহ পালন করার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল কার্যক্রম গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

১৬ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ উৎসবটি অত্যন্ত ধর্মীয় মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যে উদ্‌যাপন করে থাকেন। এ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বৌদ্ধপল্লি, জনপদ ও বিহারগুলোতে সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বর্তমানে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশব্যাপী জেলায় জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন থেকে পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সদা তৎপর রয়েছে। জাতি-ধর্ম–নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশি তার নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপন করবেন—এই প্রত্যাশা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর।

৩ পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবরদান উৎসব না করার সিদ্ধান্ত

তিন পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি বৌদ্ধভিক্ষুরা কঠিন চীবরদান উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ মাসের মাঝামাঝি থেকে কঠিন চীবরদান শুরু হওয়ার কথা ছিল।

তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বৌদ্ধ ধর্মের গুরুরা। ৬ অক্টোবর (সোমবার) দুপুরে রাঙ্গামাটি বনরূপা মৈত্রী বিহারে ১৫টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বনভান্তে শিষ্য সংঘ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ভদন্ত সৌরজগৎ মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদ বান্দরবানের ভদন্ত তেজপ্রিয় মহাথের, রাজ নিকার মার্গ চিৎমরম কাপ্তাইয়ের সহসভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের, ত্রিরত্ন ভিক্ষু অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের ভদন্ত আপ্রাশ্রী মহাথের, খাগড়াছড়ি শাসনা রক্ষিতা ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত সুমনা মহাথেরসহ অন্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু প্রতিনিধিরা।

পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের লিখিত বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০ সেপ্টেম্বর ও ১লা অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় বিভিন্ন বিহারে বুদ্ধমুর্তি ভাঙচুর ও দানবাক্স লুট করা হয়েছে। তাই বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। এমতবস্থায় নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সব বিহারে কঠিন চীবর দান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।