জাতিসংঘ বলছে, লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের শান্তিরক্ষীদের উপর গোলাবর্ষণ করেছে 

ফাইল ফটোঃ দক্ষিণ লেবাননের নাকুরায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর টহল, ৬ জুন, ২০২২।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে থাকা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী বলেছে, নাকুরা শহরে তাদের কার্যালয়ের উপর ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে আঘাত হানা হয়েছে এবং দুইজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।

লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনী (ইউনিফিল) এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের কার্যালয় ও সংলগ্ন এলাকায় “বারবার আঘাত হানা হয়েছে।”

তারা বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী পার্শ্ববর্তী একটি বাঙ্কারেও গুলি চালিয়েছে যেখানে শান্তিরক্ষীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। এই গোলাবর্ষণের ফলে একাধিক গাড়ি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তারা আরও বলেছে, বাঙ্কারের প্রবেশ পথে ইসরায়েলি ড্রোন উড়তে দেখা গেছে।

হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ

ইসরায়েল ১৯৭৮ সালে আক্রমণের পর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা তা তদারকিকরতে ইউনিফিল গঠন করা হয়েছিল। ইউনিফিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১০ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী রয়েছেন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর জাতিসংঘ তাদের মিশন সম্প্রসারিত করে এবং সীমান্ত বরাবর তৈরি করা ‘বাফার জোনে’ টহলদারি করতে শান্তিরক্ষীদের অনুমতি দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের অভিযোগ, ২০০৬ সালের যুদ্ধ বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা লঙ্ঘন করে সীমান্ত বরাবর জঙ্গি অবকাঠামো নির্মাণ করছে হিজবুল্লাহ।

ফাইল ফটোঃ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক প্রধান জাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক ডজন জনপদ থেকে মানুষকে সরে যেতে সতর্ক করেছে তারা, যেগুলোর বেশ কিছু বাফার জোনের বাইরে রয়েছে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক প্রধান জাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া গত সপ্তাহে বলেন, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা তাদের অবস্থানে নিয়োজিত থাকবে।

হিজবুল্লাহের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরুর আগে ইসরায়েল কিছু এলাকা খালি করার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ইউনিফিল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

হামাস ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে হিজবুল্লাহ ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ শুরু করে। ইসরায়েলও বিমান হামলা চালিয়ে তার প্রত্যুত্তর দিয়েছে।

এই সংঘর্ষ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ঘটনাক্রমে গত কয়েক সপ্তাহে এই লড়াই সর্বাত্মক আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েল লেবানন জুড়ে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে এবং স্থল অভিযান শুরু করছে।

হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের আরও ভিতরে অধিক জনবহুল এলাকাগুলিতে রকেট নিক্ষেপ বাড়িয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।