শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বাড়ছে দুর্ভোগ; ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি

শেরপুর জেলায় পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ৮ অক্টোবর, ২০২৪।

পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করায় শেরপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে ঢলের পানি কমলেও বন্যার্তদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

এদিকে, সোমবার দুপুরে সদরের গাজীখামার থেকে নালিতাবাড়ীর কলসপাড় এলাকায় নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে জিনিয়া বেগম নামে এক শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। এনিয়ে শেরপুরে চারদিনে দুই নারী ও এক শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি কিংবা উজানের ভারতীয় ঢল না নামলে নদ-নদীগুলোর পানি আরও কমবে এবং এক-দুই দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।

অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা এবং ঢলের পানি নামার গতি ধীর হওয়ার কারণে গবাদি পশুসহ অনেকেই উঁচু রাস্তার ওপর অবস্থান করছেন এখনও। আবার অনেক জায়গায় বন্যার পানি কমতে থাকায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বন্যার্তরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট মেরামত করে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে নগদ অর্থ সংকট এবং আয় উপার্জনের উপায় না থাকায় বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ছেন শেরপুরবাসী।

এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সহযোগিতা কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুর জেলায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেছেন খামারবাড়ির উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস।

এদিকে ঢলের পানিতে শেরপুরের শিক্ষা ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা মিলিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৪১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চলতি বন্যায় ৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। যার মধ্যে নালিতাবাড়ী উপজেলাতেই বন্যাকবলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হলো ৬৩টি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, জেলার ৫ উপজেলায় সর্বমোট ৭৪১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে ৩০২টি। এর মধ্যে ২৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।