শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি একদিন বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবারের (৮ অক্টোবর) মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ছুটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া দুর্গাপূজার ছুটি চলবে টানা চারদিন।
মাহফুজ আলম বলেন, শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় আরও একদিন ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।"
এছাড়াও বৌদ্ধ সম্প্রদায় যেন কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক উদযাপন শুরু হচ্ছে বুধবার ষষ্ঠীর (৯ অক্টোবর) মধ্য দিয়ে আর শেষ হবে রবিবার (১৩ অক্টোবর) দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবারও সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে গত ১৫ দিনে বাংলাদেশে ১৯টি পূজামণ্ডপে ভাঙচুর হয়েছে।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানাদাশ গুপ্ত ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে গত ১৫ দিনে দেশের ১৪ টি জেলায় ১৯টি পূজামণ্ডপে পূজোর প্রতিমাগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”
এবারের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের ভয়, আতঙ্ক ও মানসিক ট্রমার মধ্যে আছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত ভয়েস অফ আমেরিকাকে “দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুর হচ্ছে” উল্লেখ করে বলেন, "সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তো একটা ট্রমার মধ্যে আছে। তারা পূজা করতেও চায়, আবার করতে গেলে হামলার আশঙ্কা মধ্যেও আছে। এখন তারা দোটানায় মধ্যে আছে।”
“এবার পূজা কতটা উৎসবমুখর হবে (তা) বলতে পারবো না। তবে, পূজাকে কেন্দ্র করে ভয় এবং আতঙ্কে আছে সংখ্যালঘুরা” বলে যোগ করেন রানা দাশগুপ্ত।
৬ অক্টোবর বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এ বছর রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর এভাবে বিনা বাধায় সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পবিত্র বিহারে আক্রমণ ও বুদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলার ঘটনায় প্রশাসনের প্রতি আস্থা নেই জানিয়ে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের বলেন, “গোটা বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষু সংঘ উদ্বিগ্ন-শঙ্কিত। এমন অনিশ্চিত ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে তারা উৎসাহ পাচ্ছেন না।"
(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য ইউএনবি থেকে নেয়া হয়েছে।)