মিয়ানমারের কারাবন্দী গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি-র একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে দেশের সামরিক জান্তা স্বাস্থ্যগত কারণে ক্ষমা করেছেন বলে এএফপিকে রবিবার (৬ অক্টোবর) একটি দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
সু চি-এর ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের একজন প্রবীণ নেতা, ৭২ বছর বয়সী যা মায়েন্ট মং, যিনি ক্যান্সারে ভুগছেন, সামরিক বাহিনীর জন্য একটি হুমকি ছিলেন।
তাঁকে ২০২১ সালে সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার করে দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
“তাঁর স্বাস্থ্যের কারণে আজ তাঁর জন্য ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে,” এনএলডি’র একজন সিনিয়র সূত্র এএফপিকে জানায়। তিনি নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করতে চান নি।
যা মায়েন্ট মং মান্দালয়ের এক হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন, যেখানে তিনি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন, সূত্রটি জানায়।
“তাঁর শারীরিক অবস্থা ঝুঁকির মধ্যে আছে, উন্নতি বা অবনতি দুটোর সম্ভাবনাই ৫০ ভাগ। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি,” তিনি বলেন।
যা মায়েন্ট মং মান্দালয় অঞ্চলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশে ১০-বছর স্থায়ী গণতন্ত্রের প্রচেষ্টা উৎখাত করার কিছু দিন পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে ভিন্নমত দমনে জান্তার নিপীড়ন এনএলডি’র শীর্ষ নেতৃত্ব প্রায় শূন্য করে দিয়েছে।
অভ্যুত্থানের কয়েক মাস পর, প্রাক্তন এনএলডি মুখপাত্র এবং সু চি-র ঘনিষ্ঠ নিয়ান উইন দেশদ্রোহের অভিযোগে সামরিক হেফাজতে থাকাকালে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আরেকজন সংসদ সদস্যকে ২০২২ জান্তা ফাঁসি দেয়, যা ছিল কয়েক দশক পর মিয়ানমারে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা।
গত বছর মার্চ মাসে জান্তা নতুন নির্বাচনী আইনের অধীনে পুনরায় রেজিস্টার করতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে এনএলডিকে বিলুপ্ত করে। এর ফলে, এনএলডি আগামী নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হবে, যে নির্বাচন ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জান্তা ইঙ্গিত দিয়েছে।
সু চি-কে দুর্নীতি থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। সু চি’র বয়স ৭৯।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাঁর রুদ্ধদ্বার বিচারকে প্রহসনমূলক বলে বর্ণনা করে বলছে, বিচারের উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়া।
গত মাসে ইতালির গণমাধ্যম জানায় যে, ক্যাথলিক ক্রিস্টিয়ানদের ধর্মীয় প্রধান পোপ ফ্রান্সিস সু চিকে ভ্যাটিকানে আশ্রয় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। অং সান সু চি ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের আগে সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন।